ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বাংলা দখল করার প্ল্যান ভেস্তে দেব। সবাই রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পাঠান। আমি সবাইকে ক্ষমা করি। কিন্তু বিজেপির দালালদের ক্ষমা করি না। আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগি মানি না।
ধর্ম যার যার আপনার, সংবিধান সবার।’ সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার পদযাত্রা শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। ভারতের গণমাধ্যম জানায়, সিএএ এবং এনআরসির বিরুদ্ধে ‘অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস’ পদযাত্রাটির আয়োজন করে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে অংশ নেয় হাজার হাজার জনতা।
পদযাত্রা শেষে মমতা বলেছেন, ‘আমরা বাংলায় আছি। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কোনো কোনো নেতা এখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কথা বলছে। আমাদের সরকার ফেলে দেবেন? ফেলে দিন। ইজ্জতের জন্য যখন লড়তে নেমেছি, তখন আর মাথা নত করব না।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের নাম উল্লেখ না করে তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেত্রী বলেন, ‘এখানে আরেক বড় বিজেপি নেতা এসেছেন। তিনি আমাদের সাবধান করছেন, কেন অশান্তি হচ্ছে? আমি বলতে চাই, আগে আসামের সরকারকে বলুন।
সেখানেও তো বিজেপির সরকার রয়েছে।’ উপস্থিত সমর্থকদের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, ‘রাজ্যে সিআইএসএফ বা বিএসএফ লাগবে কিনা আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছে। আমি বলেছি কিছুই লাগবে না। আপনারা কি ভোট দেন না?? তাহলে কিসের নাগরিকত্ব আপনাকে দেবে?’
এর আগে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজ্যের দিঘা শহরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে এক বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেত্রী। তিনি বলেছিলেন, ‘আপনাদের কোনো ভয় নেই, শান্তিতে থাকুন। কেননা বিতাড়িত হওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।
মমতার ভাষায়, ‘এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (ক্যাব) নিয়ে ক্ষমতাসীনদের বারংবার বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কেননা দেশের সব রাজ্যেরই আলাদা আবেগ রয়েছে।’ গত ৯ ডিসেম্বর ভারতের লোকসভায় বহুল আলোচিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হয়।
বিলটিতে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা অমুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পার্লামেন্টে বিলটি উত্থাপন করেন ক্ষমতাসীন বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ। এরপর ১১ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় পাস হয় বিলটি।
রাজ্যসভায় এই বিলের পক্ষে ভোট পড়েছে ১২৫টি। আর বিপক্ষে পড়েছে ১০৫টি ভোট। যার প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে বিতর্কিত এই বিলটি রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মাধ্যমে আইনে পরিণত করা হয়।