Thursday, September 22, 2022

ফসল by জেবু

 

ফসল
  জেবু

***************  

  স্বাধীনতার আগে 
 একটা দেশ বা জাতি হয় না          
 সুন্দর অনন্য সৃষ্টির  জন‍্য নাকি
  স্বাধীনতা  প্রয়োজন,
  সামাজিক প্রতিসঠার জন‍্য 
  মানুষ হওয়ার ধরাবাঁধা পথে 
  হাটঁতে হাটঁতে  ক্লান্ত জাতি। 
 গাড়ি  বাড়ী জমি ফ্লাট 
  এখন মানুষের পরিচয়, 
  তাহলে কোথায়  মানুষ?
  খুজেঁ খুজে  বেলা গেলো,
   পথ খুঁজতে নাকি
  লাগে  মুক্তিযুদ্ধের চেতনা
  অধুরা  মাছে ভাতে বাঙ্গালী। 
   সচেতনতা অপরাধ বটে
   অঙ্গীকার  কই ? 
  ঘুরে ফিরে প্রেম বিলাস
  প্রতিবাদেরা দাফন হয়েছে 
  ইনিয়ে বিনিয়ে বাক‍্য বিনিময়,
  মানবতা অন্ধ
  নামী দামী হতে ওরা  মগ্ন।
 দেখো গ্লাসের ওপাশে  
  ব‍্যাংক  লুটপাট,
 সাধারনের চোখ ছলছল  জল
 এতোটুকু  বাচার আকুলতা 
 হয় না  আর পূরন,
 মাস শেষে  হিসেবের দাবানলে
 একই অভিন্ন অতৃপ্ত জীবন
  সম্মানের চাদর।
 চাল ডাল তেলের ভালোবাসাতে
  মরছে  মানুষ হারতে  হারাতে,
 বেশি  কিছু  চাওয়া নয়
 তবুও  পাওয়া  হয় না,
 স্বাধীনতার ফসল পেয়ে
  স্বপ্নরা মরে গেছে,
 ভালোবাসার জলে  যারা মরে 
 তাদের  মারতে  যুদ্ধ  লাগে না।।


       20/09/2022

ঝরা শেফালি bt মেশকাতুন নাহার

 ঝরা শেফালি 
মেশকাতুন নাহার 


শরতের শেষে স্নিগ্ধ হেমন্তে
সাদা কমলার পোশাকের আবরণে 
শুভ্রতার হাসি মেখে সৌরভ ভরিয়ে দিতে
এসেছিলে মায়াবী রূপের ঝলকানিতে 

তোমারই বর্ণচ্ছটায় উদ্যান উঠলো হেসে
ফোঁটা ফোঁটা শিশির বিন্দু তোমার অঙ্গে 
যেন সদ্য স্নান করে আসা অপূর্ব রমণীর ভঙ্গিতে 
মুক্তোর মতো স্ফুলিঙ্গ মাধুর্য দ্যুতিতে
হৃদয়ে শিহরণ জাগিয়ে তোলে 
শেফালী তোমার পুষ্পরসের উপস্থিতিতে।

তোমারই শোভায় মিষ্ট ঘ্রাণে সুবাসিত সমীরণে
রাতভর কাননে সুরভি ছড়িয়ে 
অনুরাগে ভরিয়ে দেয় মোহাবিষ্ট আবেশে
প্রচণ্ড অভিমানে ঝরে পড়ে সে প্রভাতে।

হঠাৎ প্রাতঃকালে এক প্রেমাস্পদ এসে
শিশির ভেজা স্নিগ্ধ রূপের শেফালী নিলো কুড়িয়ে 
শুভ্র অভিমানীকে নিয়ে পরম যত্নে গাঁথে মালা
অঞ্জলি দেয় দেবীর চরণে 
হৃদ মন্দিরে বসিয়ে সাজিয়ে পূজার ঢালা।

শরৎ রাণী by সৈয়দুল ইসলাম

 শরৎ রাণী 
         সৈয়দুল ইসলাম 

তারিখঃ ২২/০৯/২০২২

শরৎ সকাল ঘাসের ডগায় 
শিশির বিন্দু জল,
রোদের আলোয় হিরকের ন্যায়
করে যে জ্বলজ্বল। 

পদ্ম ফোটে দীঘির জলে
জাগায় শিহরণ,
শেফালিরও মৌ মৌ গন্ধ 
কেড়ে নেয় যে মন।

নীল আকাশে ভেসে বেড়ায়
সাদা মেঘের ভেলা,
তাই-না দেখে নীল পরীরা
নিত্য করে খেলা।

দখিনা হাওয়াতে দোলে
সাদা কাশের ফুল, 
প্রাণটা যেনো ফিরে পায়
নদীরও দুই কুল।

নীল আকাশে তারার মেলা
মিটিমিটি জ্বলে, 
শরৎ রাণী সবার প্রিয় 
রূপোলীলাই বলে।

Monday, September 12, 2022

ভালবাসার সাতরঙ by সাইদ সুমন (শাহজালাল)

 ভালবাসার সাতরঙ

সাইদ সুমন (শাহজালাল)


ভালবাসার সাতরঙে
বাধা আছে জীবন
আবৃত থাকে সে
পেন্সিলেরই মতন।
যেমন খুশি রঙ তুমি
নিতে পার তখন।

দূঃখ আছে সুখ আছে
এ জীবনে ভাই,
তাই নিয়ে জীবন নৌকা
আমরা যে সাজাই।

ভেঙে তুমি পরো না
দূঃখ কাছে এলে,
সাহস নিয়ে পথ চলো
মুক্ত হবে তাতে।

জীবন তোমার অনেক বড়ো
আসমানেরই মতো,
ভালবাসায় রাঙ্গিয়ে দাও
তোমার সীমা যত।

ভূলে ভরা জীবনটাকে
একটু পিছে ফেলে,
সাজিয়ে নাও রঙ্গ মঞ্চ
তোমার মতো করে।

তোমার ছোয়ায় হাসবে মানুষ
দেখবে বাঁচার আশা,
তোমায় মিয়ে বাধবে সে
দেশ গড়ারই নেশা।

 

স্বপ্ন ভাঙার কষ্ট by মেশকাতুন নাহার

 স্বপ্ন ভাঙার কষ্ট 

মেশকাতুন নাহার 

 

বাবা মায়ের অতি আদরের মেয়ে লোপা। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে লোপা সবার ছোট। বাবা ছোট খাটো ব্যবসা করেন। বাচ্চাদের লেখাপড়া সহ মোটামুটি চলে যাচ্ছিল তাদের জীবন। লোপা মফস্বল শহরে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ছে। মেয়েটি দেখতে যেমন সুশ্রী তেমনি গুণে ও অন্যন্য। প্রচণ্ড মেধাবী পাশাপাশি রবীন্দ্র সঙ্গীত ও ভালো গাইতে পারে। পরীক্ষার ফলাফলে বরাবর প্রথম স্থান লাভ করে। রচনা প্রতিযোগিতা সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বহু পুরষ্কার তাঁর ঝুলিতে। অসাধারণ প্রতিভার জন্য লোপা শিক্ষকদের অত্যন্ত স্নেহের পাত্রী। আচার ব্যবহার লেখাপড়া সব মিলিয়ে সকল শিক্ষকদের মন জয় করে নিয়েছে। শিক্ষকদের বিশ্বাস এই মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ভালো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে। 
হঠাৎ করেই পৃথিবী আক্রান্ত হলো এক অদৃশ্য ক্ষুদ্র জীবাণুর সংক্রমণে। পৃথিবীর হাসি যেন উদাও হয়ে গেল। কোভিড-১৯ এর সাথে শুরু হলো মানুষের টিকে থাকার লড়াই। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পৃথিবীর প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একের পর এক ছুটি ঘোষণা হলো। বাংলাদেশে ও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। কোভিড-১৯ এর কারণে লোপা সহ অসংখ্য ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হয়। 
কিভাবে কোভিড মোকাবিলা করা যায় পৃথিবীর সকল বিশেষজ্ঞদের ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এদিকে করোনা কালীন লোপার বাবার ব্যবসা মন্দা যায়। পরিবারে অভাব দেখা দেয়। অন্যদিকে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি থাকায় লোপার বাবা মা লোপার বিবাহের ব্যবস্থা করেন। একজন বিদেশ ফেরত মধ্যবয়সী পাত্রের সাথে লোপার বিয়ে হয়ে যায়। 
অনেকটা সময় পার হয়ে যখন টিকা আবিষ্কার হলো আস্তে আস্তে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু এই কোভিড লোপা সহ অসংখ্য কিশোরী মেয়ের স্বপ্ন ভেঙে দিয়ে যায়। প্রতিভা গুলো বিকশিত হওয়ার পূর্বেই দুমড়ে মুচড়ে যায়। লোপার স্বামী বিয়ের পরে আর লেখাপড়া করতে দিতে চান না। বলে দিয়েছেন সংসার আর ধর্ম কর্ম নিয়ে থাকতে। 
এভাবেই আমাদের সমাজে বাল্যবিবাহের শিকার হয়ে বহু মেয়েদের প্রতিভা ধ্বংস হয়ে যায়। তাদের আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ হয় না। দারিদ্রতা, অজ্ঞতা, কুসংস্কার সহ বিভিন্ন কারণে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না ফুলের মতো মেয়েগুলো। তাই আমাদের সবাই কে এই বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। বাল্যবিবাহের কুফল তুলে ধরতে হবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের সংশোধন ও যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ আমরা জানি একজন শিক্ষিত মা একটা শিক্ষিত জাতি উপহার দিতে পারে।।








প্রভাষক সমাজকর্ম 
কচুয়া বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ, 
কচুয়া, চাঁদপুর।

স্ব-বিরোধ by কবি বন্দনা মালিক

 স্ব-বিরোধ
    
 বন্দনা মালিক


সময়ের সাহসী উচ্চারণ শোনা যায়
শতাব্দীর অবহেলায় জন্ম নেয়া শিশুটির মুখে,
দীর্ঘশ্বাসের বাঁশি বাজায় জাম-জামরুল
অভিশপ্ত দুপুর খোঁজে কোন খাদ্যের ডাস্টবিন।

যন্ত্রণাকাতর কবির আক্ষেপে রক্তাক্ত হয় সংস্কৃতি
স্মরণ সভায় সংবর্ধিত হয় প্রয়াত বিকেল।

নিরাসক্ত মধ্যবিত্ত আজ শরতের মেঘমালা
নীরন্নের চিৎকারে সুর বাঁধে ধনকুবের মার্সিটিজ,
রাতের আঁধারে আরাধ্যা হয় যমুনা যুবতী
অর্থনীতি মুখ লুকায় মেঘ বালিকার শাড়ির ভাজে।।

অসংগতির কাব্য শোনায় তৃতীয় বিশ্ব
বোধহীন সমাজ চুমুক দেয় বধিরতার গ্লাসে,
প্রতিবাদের আকাশে মেঘাচ্ছন্ন অমাবস্যা
তবুও স্ববিরোধী আমজনতা সহস্যে ভরে দেয়
মীর জাফরের ভোট বাক্স।।


বন্দনা মালিক
গ্ৰাম ও পোস্ট: খাজুরদহ
থানা: গুড়াপ
জেলা: হুগলি