Monday, May 20, 2019

বিভাগ গল্প




গল্পের নাম : জীবনের সেরা ম্যাচ


লেখক: 

কবিরুল হোসেন মল্লিক (রঞ্জিত মল্লিক)


তারিখ :  05/ 01/19

      

বীরভূমের নলহাটির এক  অখ্যাত গ্রাম।বেল পুকুর। সকাল থেকেই ঐ গ্রামে উৎসবের মেজাজ। বেল পুকুরের যুবক সংঘ ক্লাবে আজ পিকনিক। আজ রবিবার ।আর কয়েক ঘন্টা পরেই শুরু হবে যুগান্তকারী ডার্বি লড়াই  - ফ্রান্স বনাম ক্রোয়েশিয়ার বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল  ম্যাচ।
     ছেলেদের রক্ত শুধু ফুটছে নয় , বাষ্প হয়ে উড়ছে। সবুজ ঘাসের কার্পেটে ঝিরঝিরে বৃষ্টির চন্দন। কাটা মুরগীর গায়ে হলুদ , লংকা আর আদাবাটার ছোপ ছোপ বসন্ত। দুটো শিবিরে ভাগ হয়েছে ক্লাবের ছেলেরা - এক দল নীল সাদা আর এক দল লাল সাদা। গরম তেলে সবে ছাড়া হয়েছে  মটরশুঁটির কচুরি। অলি গলিতেও আজ নীল আর লাল  এর ফাগুন ঝরানো আগুন। পাড়ার মেয়ে বৌদিরা ও আজ বসন্তের বাহারী স্বাদে ও ফুলে রঙ্গীন। কিছু চ্যাংড়া পোলা লুকিয়ে এনার্জি টনিক কিনতে গিয়েছিল। রাতে হবে উদ্দাম নাচ। যাকে বলে কোমড় দুলানো টনিক নৃত্য। সঙ্গে নাসিরুদ্দিনের ঐ বসন্তের আবেগ  : "উ লালা উ লালা ......"।আজ বহুদিন পরে ,  20 বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে নেপোলিয়ানের দেশ পেতে চলেছে  স্বপ্নের বিশ্বকাপ। অন্যদিকে ডাবর সুকেরের দেশ কম যায় না। ওদের  ভক্তের শিরায় উপশিরায় আড্রিনালিনের দাবানল।
    ডাবর সূকেরের জোরালো ভয়েস , "20 বছরের চোখের জলের ক্ষিদে আজ Shampaigne  এ মেটাবো। 20 বছরের প্রতীক্ষা! 20 বছরের প্রতীক্ষা , একটা যুগের অবসান হবে"।
    টনিক নৃত্যের ধ্রুপদী ব্যাণ্ড গোমরা মুখ করে ফিরে এল। সাত্যকি ই প্রথম খবরটা দিল। সনাতন রক্ষিতের ভাগ্নী মধু  গত রাতে suicidal attempt নিয়েছে। শরীর পুরো বিষে নীল হয়ে গেছে। ভগবান ই এখন ভরসা।  বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতন খবরটা সকলের শরীরে কাপুঁনি ধরিয়ে দিল। ফিকে হয়ে এল পিকনিকের আমেজ।সহসা ঘন কালো মেঘে ঢাকল আকাশ। সদ্য গায়ে হলুদ প্রাপ্ত মুরগীর দেহ গুলো পাংশুটে হয়ে এল।
   যুবক সংঘের আকাশ বাতাস জানে - কে এই মধু ? মধুশ্রী জানা। ক্লাবের প্রতি কোণে কোণে রয়েছে মধুশ্রীর উন্নয়নের ছাপ। মেয়েটির বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান অসীম। ক্লাবের ফাটা মেঝে , ঘুণ ধরা বাঁশ আজ তার স্বাক্ষী।
   ক্লাবের এক কাঠা জমির জন্য লড়াই, কালার টিভি, সেক্রেটারী নির্বাচন , লাইব্রেরী কি না করেনি এই কালো লড়াকু মেয়েটা! তারই কিনা এই পরিণতি!মেনে নেওয়া বড্ড কঠিন।
 
মধুশ্রীর বাড়ির সামনে উপচে পড়া ভিড়। নীল আর লাল পুরো মিশে গেছে। সবার মন ছেয়ে গেছে ঘন কালো মেঘে। পল্লব হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে এল।
আমার হাত টা শক্ত করে ধরে বলল , " ভয়ের পারদ অনেকটাই নেমে  গেছে। শরীর থেকে বিষ বেরোতে শুরু করেছে।  আর দেরী নয় এখনই  ট্রেন ধরতে হবে। যে করেই হোক মধুশ্রী কে বাঁচাতে হবে।  AIIMS এর একজনের বড় সার্জেনের এর কেয়ারে আছে ও।" 
  পাড়ার কিছু দামাল ছেলে এক যোগে বেরিয়ে এল। গন্তব্য পি জি হসপিটাল। পল্লব যাবার আগে সকলকে বলে গেছে যেন মোবাইল টা সবাই চালু রাখে।  আর সেই সাথে মেসেজ বক্স।     বৃষ্টির ভ্রুকুটি কে দূরে ঠেলে আমরা গাড়িতে উঠলাম।মধুশ্রীর  এই বিষয়টা সবার মনে ঘোরাফেরা করছে। খুব সেনসেটিভ একটা ম্যাটার।
     বাবা মা গত হবার পর  মধুশ্রী জানা অবিভিক্ত মেদিনিপুরের ঘাটালের এক অনামী গ্রাম থেকে মামার বাড়ি নলহাটির বেলপুকুরে  আসে। পড়াশোনায় অসম্ভব মেধাবী মধু  খুব তাড়াতাড়ি সাফল্যর মুকুট পড়ে।
   বারো ক্লাস পার হবার পর  মধু কলেজে ভর্তি হয়। Chemistry Honours ।গরীব মামা বলেই দিয়েছিল আর পড়াশোনার খরচ টানতে পারবে না। তাই নিজেই শুরু করে বাঁচার জন্য লড়াই। টিউশন পড়তে গিয়েই  পরিচয় হল 3rd year এর Biology এর ছাত্র গৈরিক। মধুর সাথে গোরার সখ্যতা , ভাব বিনিময় , বিভিন্ন বিষয়ে ডিবেট এক দিন বন্ধুত্বের সবুজ সীমারেখা ছাড়িয়ে এক আলাদা রূপ পেল। দুজনেই বুঝতে পারল একে অপর কে ছেড়ে থাকা প্রায় অসম্ভব।
সিনেমা , বাদাম ভাজা , কফি হাউস , নন্দন , পুজো, নিকো পার্ক, পৌষ মেলা, তারাপিঠ সব কিছুই স্বাক্ষ্য থাকল ওদের প্রেম। দিন গুলো এভাবেই কাটছিল। কিন্তু এক দামাল ঝড় সব কিছু সমীকরণ পালটে দিল। গৈরিকের বাবার সাথে বাঁধল চরম সংঘাত।বাবার ইচ্ছে ছিল ছেলে ম্যানেজমেন্ট পড়ুক। কিন্তু গৈরিকের জেদ সে ডাক্তার হবেই। বাবা ছেলের অশুভ বৈরীর প্রাচীর  ক্রমশঃ এমন জোরালো হল  যে গৈরিক ঘর ছাড়তে বাধ্য হল। সেই যে  ঘর বিমুখ হল , আর কোনো খোঁজ পাওয়া গেল না।
মধুর সাথে যোগাযোগটা আস্তে আস্তে শিথিল হল। হাতে গোনা কিছু চিঠি , আর কিছু ফোন কল ! তারপর সব নীরব। দীর্ঘদিন কোনো যোগাযোগ নেই দুজনের। মধুও একটা ছোট চাকরি পেল।
   মধুর মামাও বিয়ের জন্য চাপ বাড়াতে শুরু করল। বাধ সাধল মধুর মন। ও শুধু গৈরিক এর জন্য ই বেঁচে আছে। মামার জেদ বাড়তেই  মধু ও কেমন মুষড়ে পড়ল।
   একদিন বিয়ের জন্য সম্বন্ধ আসল। কিন্ত মধুর বিয়ের প্রতি সীমাহীন বিতৃষ্ণা সেই সব বিফলে গেল। গৈরিকের শেষ চিঠির শেষ দুটি শব্দ  , মধুকে আজ ও ফ্রেশ অক্সিজেন দেয় - " আমার জন্য ভেব না , আমি ঠিকই ফিরে আসব। সব ঠিক হয়ে যাবে।"
   মধুও গোরার কথা গুলো বেদ বাক্য মনে করে আজ ও ওর জন্য প্রতীক্ষা করে আছে। এই ভাবে কেটে গেল 16 বছরের একটা লম্বা ইনিংস। নলহাটি, তারাপিঠের বহু মন্দির, মায়ের থান মধুর ভক্তি  ও মানতের ফুল বেলপাতায় পল্লবায়িত হয়ে উঠল।
কিন্তু একদিন সেই প্রতীক্ষাও কবর পেল।
  মামা ভাগ্নীর চূড়ান্ত মনোমালিন্য, মধুর প্রতি লাগামছাড়া অবিচার , তিন তিন বার ভালো সম্বন্ধ ফসকানো সব কিছুই মধুশ্রীকে বাধ্য করল এমন হঠকারী , ঘৃণ্য সিদ্ধান্ত নিতে।সনিবার দুপুরেই অনেক অশ্রু ঘাত প্রতিঘাতের পর , একটা লড়াকু , শ্যামা শরীর তিক্ত গরলে ঢলে পড়ল।
   বৃষ্টি থেমে গেছে , মেঘও কাটল। আমাদের গাড়ি ধর্মতলা ক্রস করতেই পলের ম্যাসেন্জার ছোট ছোট নীল সাদা চাদরে ভরে উঠল। সেই সাথে wh app এর সবুজ গালিচা।
 বিপুলের ফোন টা ঝলসে উঠল, " পলু দা বিপদ কেটে গেছে। মধুদি ভাল আছে ।খবরটা জানিও দাও সকল কে। আমরা এখানেই আছি......।"বৈকালের একটু আগেই আমরা SSKM Hospital এ পৌঁছলাম। বেল পুকুরে যখন খবরটা  দিলাম তখন মনে হল সাহারা মরুভূমি বারি ধারায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে। কলকাতা শুধু নীল আর লাল কাপড়ে ঢেকে আছে। মন্দির,  মসজিদ  , গির্জায় চলছে শুধু ফুটবল ভক্তের প্রার্থনা।
   আমি যখন লাস্ট ফোন টা করি আমার গ্রামে  তখন টনিক ব্যাণ্ড নতুন করে জেগে উঠেছে। পল্লব কে আর পেলাম না। ও যে কোথায় চলে গেল। ও বলছিল বটে AIIMS এর এক বড় ডাক্তার মধুর treatment করেছে।আমি পি জির করিডর দিয়ে নামতেই ভূত দেখার মত চমকে উঠলাম।পল্লবের কাঁধে হাত রেখে এগিয়ে আসছে বছর 39 এর একটি সৌম্য পুরুষ। সেই চাপ দাড়ি , চেনা ছন্দ। উন্নত চিবুক। গৈরিক সেনগুপ্ত। আমাদের ছোটো বেলার বন্ধু ও ভীষণ brilliant student।
   আমি , গোরা , পলু তিন জনে চায়ের স্টলে জড় হলাম। বিদেশী ব্র্যাণ্ডের সিগারেটের ধোঁয়ায় স্টলটা ম ম করে উঠল।সকাল থেকে উপোস চলছে। গোরাই খাবারের অর্ডার দিল।
    মধুর পাশে গোরাকে অসাধারণ লাগছে , মধুর নীল ছাপা শাড়ি , গোরার ব্রিক কালারের ব্লেজার। ঠিক যেন ফ্রান্স আর  ক্রোয়েশিয়ার  কমবিনেশন।
    গৈরিক রাগ করে বেঙ্গালুরু চলে গিয়েছিল। ওখানে একটা মেডিক্যাল কোর্স করে।তারপর ব্রিসবেন। ওখানেও একটা  Certificate Course করে। তারপর মাঝে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় আর যোগযোগ রাখা হয়নি। তবে মাস ছয়েক আগে পলুর সাথে হঠাৎ FB তে যোগাযোগ হয়। পলু বলেছিল বিষয়টা ও গোরা দেশে ফিরলেই জানাত। কিন্তু তার আগেই এত সব ঘটে গেল।মধুর এই ঘটনাটা পলুই গোরাকে জানায়। ভাগ্যচক্রে গৈরিক সেদিন কলকাতার Apollo Hospital এ ছিল।
   
    মধুকে রিলিজ করতেই আমরা চার বন্ধু বেলপুকুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ক্লাবের নিশিথদা কে ফোন করতেই ওখানকার atmosphere ta পুরো জরিপ করলাম।ফোনে কোনো কিছু শুনতে পাইনি। শুধু জোরালো , কানের পর্দা ফাটানো "  উ লা লা উ লা লা "। আর টনিক ব্যাণ্ডের তাণ্ডব নৃত্য। গোরার চোখে তন্দ্রা নামলো। সারারাত মধুর কেস টা নিয়ে পড়েছিল। দুচোখের পাতা এক করেনি। ওর  নিখাদ পবিত্র শরীরটা মৌয়ের কাঁধে হেলে পড়ল।মৌ( গোরা মধুকে মৌ বলে ডাকে) ও  পরম মমতায় ও কে  বুকে জড়িয়ে নিল।আমি আর পলু চোখ বন্ধ করলাম।পলুর চোখের কোণে একটু শিশির কণা লক্ষ্য করেছিলাম। পরে যখন বুঝেছিলাম  তার কারণ তখন সময়ের রেল গাড়ি অনেক স্টেশন , অনেকটা পথ পেরিয়ে গেছে।
    আমাদের কারূর মোবাইলে চার্জ নেই। খেলা আমাদের দেখা হল না।  আমরা যখন বর্ধমান ক্রস করলাম  তখন গ্রিজম্যানের গোলে ফরাসী বিপ্লব এসেছে।20 বছরের দীর্ঘ খরা , প্রতীক্ষার পর নেপোলিয়ানের দেশ পেতে চলেছে  ফুটফল বিশ্বকাপ।
    আমাদের বেলপুকুরের মধুশ্রীরও 16 বছরের প্রতীক্ষার ফসল গৈরিক। রাস্তার এক ধাবার কাছে যখন গাড়িটা দাঁড় করালাম , তখন লাল আর নীল ঝড়ের সুনামি  আছড়ে পড়ছে  গোটা এলাকায় । 20 বছরের পর দুটো দেশের প্রাণ ঢালা আবেগ!
    এমবাপে , মরডিচ , পোগবা , উমতিতি!
    এক বহু যুগের লড়াই প্রতীক্ষার ফসল আসছে ঘরে।
     বহু কষ্টে ড্র করার পরও মরডিচরা দেশ কে বাঁচাতে পারলনা। এমবাপের শৈল্পিক স্পর্শে ফ্রান্সের ঘরে আসল সোনার পরী। প্রতীক্ষার বসন্ত।
     আমাদের বেলপুকুরও  16 বছরের অপেক্ষার পর বিশ্বকাপের মুখ দেখল। গৈরিকের জোড়া গোল! এক গোলে মৌ এর জীবন বাঁচানো আর এক গোলে মৌ কে সারা জীবনের জন্য নিজের করে নেওয়া।
     পরের দিন পটল দা আমাকে ম্যাচের পুরো রিপোর্টটা দিয়েছিল। যে ম্যাচটা গতকালের ফাইনালের থেকেও অনেক বেশী রোমাঞ্চকর।
      পলুই প্রথম থেকে মৌ কে ভাল বাসত। ওর যাবতীয় পড়ার খরচ , সখ , আল্হাদ পলুর টিউশনির টাকায়। এমন কি মৌ এর পি এইচ ডির জন্য ফর্ম ফিলাপের খরচও।নিজের দিদির বিয়ের জন্য  কেনা সোনার বালা বন্ধক দিয়ে পলু মৌ এর নিথর শরীরটা কলকাতায় পাঠিয়েছিল চিকিৎসার জন্য। গাড়ি ভাড়াও ওর নিজের। শেষ লগ্নে গোরার কাছে পুরো বিষটা খুব সুচারু ভাবে বর্ণনা করাটাও ছিল ওর কাছে বিশাল চ্যালেঞ্জ।
      গৈরিক ও মৌ এর বিয়ের পাকা কথা বলতে পলুই গেল গৈরিকের মার সাথে দেখা করত। সব ঠিক ঠাক হয়ে গেল।
শ্রাবণের এক সন্ধ্যায় বেজে উঠল সানাই, মৌ এর লাল বেনারসী, গৈরিকের নীল শেরওয়ানী ঝলমল করে উঠল। আমরা সবাই হাজির বিয়েতে। সাথে টনিক ব্যাণ্ডের নৃত্য। শুধু একজন আসতে পারেনি।
    জীবনের শেষ লগ্নে , ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার আগে একটা ভাল, দামী MNC এর  মোটা মাইনের চাকরি পেয়ে চলে গেল আসাম ; আমার ,  আমাদের সবার প্রিয় ছেলে পল্লব। তবে যেদিন মৌ আর গোরা কে আমি স্টেশনে এগিয়ে দিতে গেলাম , সেইদিন  হঠাৎ করে পলুর সাথে দেখা হল। ওর বোনের বিয়ের একটা সম্বন্ধের ব্যাপারে ও এসেছে।আমাকে জোর করেই ওর বাসায় নিয়ে গেল।
    আমি ওর স্টাডি রুমে বই এর তাক থেকে একটা বই পাড়তেই সভস্ত কিছু স্ফটিকের মতন স্বচ্ছ হয়ে উঠল। বইয়ের ভিতরে লুকানো চিঠিটাই  হয়ত সব অংক , হিসেব বদলে দিতে পারত ; যদি পলু ওটা ঠিক সময় মত হাতে পেত।
     চিঠিটা মৌ পল্লব কে লিখেছিলএটাই ছিল মৌ এর শেষ চিঠি।
                     
                           10.07.18
    প্রিয় পল্লব,
              আমার জীবন মামার অত্যাচার আর পীড়নে দিন দিন বিষময় হয়ে উঠছে। কাজে মন বসাতে পারছি না। গৈরিকের আশায় বসে থেকে থেকে নিজেকে অনেক শাস্তি দিয়েছি। জানিনা ও কবে আসবে। তুমিও কিছু বললে না কোনো দিন। তবে আমি এই পৃথিবী ছেড়ে চলি যাচ্ছি চির  জীবনের মত। হয়ত আর কখনো দেখা হবে না তোমার সাথে।
         তবু ভাল থেকো।
                   
                      মধু
   
         ............          ...............
    শেষ যেদিন পলু চলে গেল আসামের উদ্দেশ্যে, ওর হাতে চিঠিটা ফেরৎ দিয়ে বললাম;  "এত বড় sacrifice করলি! " ও যখন ভেজা  রুমালটা পকেটে রাখল তখন ট্রেন already ছেড়ে দিয়েছে। MNC এর চাকরির Appointment Letter টি মধুর ঐ ক্রাইসিস এর আগেই পেয়েছিল। ও পারত সব সমীকরণ বদলে দিতে , কিন্তু করেনি।
    ছোটো বেলায় ওর সাথে প্রচুর ম্যাচ খেলেছি। অনেক গোলও করেছে। আজ মনে হল নলহাটি সারদা সুন্দরী হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ঐ লাজুক গোবেচারা ছেলে , roll no 13 পল্লব কান্তি ঘোষাল  জীবনের সেরার সেরা  ম্যাচ খেলে Golden Ball  ও  Golden Boot আদায় করে নিল।

No comments: