Thursday, January 16, 2020

কীভাবে পণ্য আমদানি করা যায় । পণ্য আমদানি করার উপায় । পণ্য আমদানি করতে কী কী করব??

আপনি যদি বিদেশ থেকে পণ্য এনে বাংলাদেশে বিক্রয় করতে চান তাহলে কিভাবে করবেন ? এখানে মূল বিষয়গুলো এমন ভাবে আলোচনা করা হলো যাতে এই লেখাটি সম্পূর্ণ পড়ার পর আপনারা বিদেশ থেকে নিজেই আপনার পছন্দের পণ্য দেশে এনে ব্যবসা করতে পারেন। যেকোনও দেশ থেকে পণ্য আমদানির প্রক্রিয়া প্রায় একই রকম।
১.শুরুতেই “আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের অধিদপ্তর” থেকে একটি আমদানি লাইসেন্স করতে হবে। আমদানি লাইসেন্স করতে হলে যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র লাগবে – আমদানি কারকের জাতীয় পরিচয় পত্র, আমদানি কারকের তিন কপি ছবি, ট্রেড লাইসেন্স, ব্যাংক সলভেন্সী সার্টিফিকেট, ট্রেড এসোসিয়েশন সনদ, আমদানি কারকের TIN সার্টিফিকেট ।
২. আমদানি লাইসেন্স করার পর আপনাকে যে দেশ থেকে পণ্য আনবেন সেই দেশের উৎপাদনকারী বা পণ্য সরবরাহকারীর সাথে যোগাযোগ করতে হবে। বর্তমানে alibaba.com বা amazon.com  থেকে online এ যোগাযোগের মাধ্যম বেশ জনপ্রিয় ও সহজ। তবে আপনি যেকোনও মাধ্যমে আপনার পছন্দের বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

৩. আপনি যখন আপনার পছন্দের সরবরাহকারী কে পেয়ে যাবেন তখন আপনি আপনার প্রয়োজন অনুসারে -পণ্যের ধরন, কালার, সংখ্যা ইত্যাদি বিষয়গুলোর তালিকা পাঠাবেন এবং পণ্যের মূল্য ঠিক করে নিবেন। সরবরাহকারীর সাথে সবকিছু ঠিক হয়ে গেলে সরবরাহকারী আপনাকে একটি pi অর্থাৎ Pro forma invoice পাঠাবে।এখানে পণ্যের সকল বিবরণ সহ তথ্য থাকবে। এটি অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের প্যাডে হতে হবে এবং বিক্রতার স্বাক্ষর থাকতে হবে। Email অথবা চিঠির মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদান করা যেতে পারে।
৪. এবার উক্ত সরবরাহকারীর উদ্দেশ্যে LC অপেন করতে হবে। LC আপনাকে ব্যাংক থেকে Open করতে হবে। LC অপেন করতে হলে Pro forma invoice এর কপি, আমদানি লাইসেন্স এর কপি, ট্রেড লাইসেন্স এর কপি, পণ্যের মূল্য ইত্যাদি নিয়ে একটি ব্যাংকে যেতে হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ব্যাংক LC Open করে দিবে।তবে সরবরাহকারী যদি আপনার কাছ থেকে LC দাবী না করে তাহলে LC দেওয়া লাগবে না। প্রকৃত পক্ষে LC হলো সরবরাহকারীর টাকা পাওয়ার নিশ্চয়তার কপি। ব্যাংক দুই পক্ষের মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করে। করান আমদানিকারক পণ্য পেয়ে টাকা দিতে না পারে আবার সরবরাহকারীও টাকা পেয়ে পণ্য না দিতে পারে তাই ব্যাংক মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করে । এবার আপনার LC এর কাগজ সরবরাহকারীর কাছে পাঠাতে হবে। সরবরাহকারী LC এর কাগজ পাওয়ার পর পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহের ব্যবস্থা করবে।
৫. এবার সরবরাহকারী আপনার চাহিদামত পণ্যগুলো জাহাজে বা বিমানে লোড করবে।সাধারনত খরচ কমানোর জন্য জাহাজে লোড করা হয়। জাহাজে পণ্য লোড করার পর জাহাজ কর্তৃপক্ষ সরবরাহকারীকে Bill of Loading প্রদান করবে। এবার সরবরাহকারী আপনাকে Bill of Loading এর কপি মেইলের মাধ্যমে প্রদান করবে।এতে আপনি নিশ্চিত হলেন যে আপনার পণ্য সত্যি জাহাজে উঠানো হয়েছে। উক্ত Bill of Loading এ বাংলাদেশে জাহাজ পৌছানোর একটি সম্ভাব্য তারিখ থাকবে।
৬. নির্ধারিত তারিখে আপনি পোর্টে গিয়ে C&F এজেন্টের সহযোগীতায় আপনার পণ্য খালাস করিয়ে আনবেন।ইচ্ছা করলে আপনি নিজেও পণ্য খালাস করাতে পারেন। তবে কাষ্টমস এর কাজ কঠিন বিধায় সবাই C&F এজেন্টের সহযোগীতায় পণ্য খালাস করিয়ে আনে। কাষ্টমস এর কাজ শেষ হওয়ার পর আপনি আপনার পণ্য বন্দর থেকে বের করার অনুমতি পাবেন।
আশাকরি এই লেখার মাধ্যমে আপনি বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি বুঝতে পেরেছেন । এখন আপনি নিজেই বিদেশ থেকে আপনার পছন্দের পণ্য আনতে পারবেন

No comments: