Tuesday, April 2, 2019

আমি বেশ্যাকে ভালোবাসি।
ভবেরতালে




আমি এক বেশ্যাকে ভালোবাসি
সমাজের দায়ে তাকে নামতে হয়
আর ফোঁটাতে হয় পরিবারের হাসি
ভাগ্যকে মেনে নিয়েই তার চলতে হয়।
মেয়েটা আজকাল ভালো হতে চায়
কিন্তু একবার যদি কোন দাগ লেগে যায়
তবে সে দাগ মৃত্যু পর্যন্ত তাড়া করে
আর তিলে তিলে অন্তরাত্নাকে পিষে মারে।
একদিন ভুলেই যায় যে তারও মন ছিলো
স্বপ্ন ছিলো এবং স্বপ্নের মানুষও ছিলো
কিন্তু মনের মানুষকে পাথর চাপা দিয়ে
চলতে হয় কামনার স্পর্শ নিয়ে দেহ বয়ে
আজও কারো ভালোবাসায় অশ্রু ঝড়ে
কিন্তু সমাজ কি তাকে স্বাধীন ছাড়ে?
পুরুষরা হাজারোবার দেহ নিয়ে খেলে
তবুও কুমার হিসেবেই পরিচিতি মিলে।
অন্তত তাদের চেয়ে ঢেড় ভালো
যাদের দেখানো কুমারিত্ব আর ভেতরে কালো
মিথ্যের চাদরে প্রতিদিন খুন করে হাজারো মন
পর্দার আড়ালে ভদ্র সেজে করে চলে মনোরঞ্জন।
ন্যকামোমুক্ত আমার হৃদয়ের নারী
ভালো হয়ে গিয়ে হতে চায় সংসারী
কেবল আমার জন্যই যে এখন বাঁচতে চায়
সমাজ কি বলে তাতে আমার কি এসে যায়?

প্রেম এখন বাজারে
ভবের তালে
------------------------------------------
প্রেম এখন বাজারে,
পত্রিকার পাতায় ধর্ষনের কলামে
আর অপরাধ জগতের গলিতে,
প্রেম এখন ইনবক্সে বিকৃত এক আহবানে,
আকর্ষনীয় অফারে, রুপ আর ইঞ্চির পারদে
প্রেম এখন ডাস্টবিনে আর মনুষত্বের কফিনে
আত্না আর হৃদয়ের প্রেমিকরা ঠাঁই পায় গারদে।
প্রেম এখন পণ্যের আকর্ষনীয় প্যকেটে
অথবা বিত্তশালীদের নোটভর্তি পকেটে
প্রেম হারিয়েছে নেশায় আর গাজার টানে
প্রেম এখন রুপালী পর্দায় উলঙ্গ যৌনমিলনে
ভালোবাসা এখন সাদা রঙের দাস
দেহের প্রতিটি তিলের হিসেবে- আত্নাহীন লাশ
প্রেম এখন শরীর থেকে শরীরে যাওয়ার প্রতিযোগীতায়
প্রেম এখন মদের বারে, সুড়সুড়ি লাগানো ওর্কেস্ট্রায়।
প্রেম এখন বউকে রেখে অন্যের শাড়ির তলায়
প্রতিদিন বিশ্বাসের সতিত্ব হরণ, আর ভণিতায়
প্রেম এখন মাইনের অঙ্কে আর দেহের দোলায়
প্রেম এখন প্রেমহীন সাজানো অবাধ বিলাসিতায়
প্রেম এখন পুতুলের সাথে সম্ভোগ দায়হীন জীবনে
হৃদয় ’শিরোনামে’, লালসা আর স্বার্থপরতা্ বিবরণে।

কালো মেয়ে
ভবের তালে
আচ্ছা! কালো হয়ে জন্ম নেয়া কি অপরাধ?
তাহলে কেন কালোদের সাধ-আহ্লাদ বিসর্জন দিতে হয়?
এমনকি বাড়ীর ভেতরেও কালো মেয়ে হলে
আচরনে আচরনে সকলেই যেন ইশারায় বলে
তুমি কালো! কেন কালো বলে কি আমার নেই কোন সাধ?
সাজ-গোজ করে বান্ধবীরা অনুষ্ঠানে যায়
কিছুদিন আগে আমিও তাদের সাথে এক বিয়েতে যাই
আঁড় চোখের চাহনী বুকেতে শেল বিঁধায়
এখন কোথাও যেতে বললে বলে দেই হাতে সময় নাই
কারন বাড়ীর সব কাজ আমাকেই করতে হয় তাই।
এক ছেলেকে খুব ভালো লাগতো কিন্তু সাহস হয়নি এতদিন
সেদিন সাহস করে বলেই ফেললাম, এই এদিকে শোন!
তোমাকে আমি খুব ভালোবাসি - আছে কি পছন্দ অন্য কোন?
অট্টহাসিতে বন্ধুদের ডেকে বলে আমি না কি আলকাতরা লাগানো টিন
আচ্ছা আমার কি কোন হৃদয় নেই? নর্দমাভরা ডাস্টবিন?
কোকিলও তো কালো কিন্তু তার সুরে করে ফাগুন আসে
আমার দু চোখেও তেমনি ভালোবাসা পাওয়ার স্বপ্ন ভাসে
ভাবি, সম্পর্কের বাজারে কি কেবল সুন্দর দেহের মূল্যই পাওয়া যায়?
আত্নার অস্তিত্ব, অনুভূতি আর ভালোবাসা কি ধুঁকে ধুঁকে প্রাণ হারায়?
কালো মেয়ের ভাগ্যগুনে বিয়ে হলেও পরিণত হতে হয় জীবন্ত লাশে।
সেদিন এক মাঝবয়সী লোক বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে
লোকটি নাকি অনেক টাকা যৌতুক দাবী করেছে
শুনে বাবাও বলে উঠলেন, ‘কপাল পোড়া মেয়ে!’
আমি কাঁদি আর বলি যখন জন্ম দিয়েছিলে নাওনি কেন চেয়ে
বিধাতার কাছে সুন্দরী এক মেয়ে? যাকে বিক্রি করতে অনেক টাকা দিয়ে?

ভবের তালে
[সত্য প্রেমের অমর কাহিনী অবলম্বনে-
এ যুগের ফরহাদ-শিরীন বা কায়েস-লায়লা বললে ভুল হবেনা। আপনাদের সহযোগীতাই পারে ক্যন্সার রোগীদের সাহায্য করতে। সকলে মিলে এগিয়ে আসুন। এমনও হতে পারে যে আপনার পরিচিতজনের মধ্যেও ক্যন্সারে আক্রান্ত রোগী থাকতে পারে...’দশের লাঠি-একের বোঝা’ কথাটা মাথায় নিয়ে সকলে মিলে যদি আমরা তহবীল সংগ্রহ করার মাধ্যমে অগ্রসর হই তবে আশা করি কোন ক্যন্সার রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যাবেনা- ভবের তালে।]
নাভিলা নামের মেয়েটি,
প্রথম ভালো লাগার মুহুর্তে প্রেমে পড়ে যায়
হারিয়ে যায় এক সুদর্শন যুবকের ভালোবাসায়
জীবনখাতায় নাম লিখে ফেলে ছেলেটি।
প্রকৃত প্রেম কখনও কি কন্টকমুক্ত হয়?
অগ্নিপরীক্ষার মধ্যেই নিহিত থাকে জয়-পরাজয়
কত সম্পর্ক এ পরীক্ষা দিতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে
গুম হয়ে যায় বিশ্বাস অথবা প্রাণটাই যায় ঝড়ে।
নাভিলার প্রেম অবশেষে সফলতা পেয়েছে
কিন্তু প্রতিটি রক্তবিন্দু তার থেকে পরীক্ষা নিয়েছে
যেদিন বাবা-মা আর বাড়ী ছেড়ে অজানায় দিয়েছে পাড়ি
সেদিনই শিরীন-ফরহাদের নতুন ইতিহাস লিখে দিয়েছে এ নারী।
বড়লোকের মেয়ের অসম প্রেম বলে কথা
জাত যাওয়ার ভয় এখনও সমাজের প্রথা
সকল দোয়ার বন্ধ হয়ে যায়, করে দেয়া হয় পর
মুখ রক্ষায় বাবা মাকেও সাজতে হয় বর্বর।
মোহাম্মাদপুরে এক ছোট্ট রুমের ব্যবস্থা হয় ভাড়ায়
পরিবার হারানোর ব্যথা ভুলে গিয়ে পেমিকের বুকেতে হারায়
জীবন নদীর এ কুল পেতে ঐ কুল ধ্বসে পড়ে যায়
উতলা মন বারবার বাবা মায়ের কোলে ফিরে যেতে চায়।
বিপদে- আপদে প্রেমিকের পাশে দাড়ায় সর্বক্ষন
নাভিলার প্রেম গড়ে দেয় আনিসের অগোছালো জীবন
যে আনিস পড়েছিলো উদ্দেশ্যহীন হয়ে গন্তব্য অজানায়
সমাজের সাম্নুখে আজ সে মাথা উঁচু করে দাড়ায়।
প্রকৃত প্রেমের শক্তি অসীম যদিও সহজ নয় তাকে পাওয়া
নাভিলার প্রেম সফল হয়েছে তাই তো বাড়ী ফিরে যাওয়া
পরিবারের সকলেই খুশী নাভিলাকে পেয়ে আাজ
আনিসের সফলতায় গর্বিত আজ গালি দেয়া সেই সমাজ।
জীবন নদীর দু-কুল যখন মিলে মিশে একাকার
প্রেমের প্রমান তখনও বুঝি ছিলো কিছু দরকার
বিধাতার খেলা বড়ই আজব এলোমেলো সবকিছু আবার
রক্ত পরীক্ষায় ধরা পড়ে যায় আনিসের ক্যন্সার।
সদ্য জন্ম নেয়া ফুঁটফুঁটে মেয়ে ডাকেনি এখনও বাবা বলে
দুরু দুরু মন কখন বুঝি ও সবকিছু ছেড়ে যায় চলে
চিকিৎসার পেছনে ছুটোছুটি করে কত রাত নির্ঘুম কাটে
বিপদ এলে আপনরাও সব দুর দিয়ে চুঁপিসারে হাটে।
নাভিলার প্রেম শক্তি হয়ে বাড়ায় মনোবল
মুখ বুজে সহ্য করে আনিস ক্যন্সারের ধকল
আজ আনিস সুস্থ্য তবুও মাঝে সাঝে কুঁকিয়ে ওঠে
নাভিলারও আজ দু-কুল নিরাপদ, সুখ ভরা দু মুঠে।
প্রকৃত প্রেম রুপকথা বলে দায়সাড়া হয়ে থাকে যারা
নাভিলা-আনিস নয় ইতিহাস এ যুগেরই মানুষ তারা
প্রকৃত প্রেম এক কঠিন সাধনা সাত-সাগর পাড়ি দিতে হয়
আত্নত্যাগ, ধৈর্য, আর প্রমান দিয়েই ভালোবাসার হয় জয়।

তুমি মা হিসেবে অনবদ্য
ভবের তালে

খুব ছোট বেলায় ডেকেছিলাম বাবা লে
শুধু বুঝেছিলাম না ফেরার দেশে গেছে চলে
লোকজনের ভীড়ে পরিবেশ ছিলো অশান্
জীবনের অধ্যায় যেন আচমকাই হলো মাপ্ত


সান্ত্বনার ভীড়ে সদ্য জ্ঞান ফেরা নারী
যৌবন শেষ হতে তখনও অনেক দেরী
নারীরাই যেন নারীদের মাথা খায়
সব শুনে বিধবা বধু ফের অজ্ঞান তে চায়


অনেক পুরুষ আবার অসহায়ত্বের সুযোগ খোঁজে
মুখে সহায়তার কথা চোখ থাকে যৌবনের ভাঁজে
যেন বিধাতার প্রেরিত ত্রানকর্তা এক মহামানব
সুযোগের প্রতীক্ষায় আড়ালে থাকা মাংসের দানব


পুরুষ যেখানে ব্যর্থসেখানে বিজয়ী নারী
কামনাকে জলাঞ্জলী দেয়েনিরবে কাঁদে বেচারী
তবু শক্ত রেখে মনকে একজন মা হতে পারে সে
সব ব্যথা হাসিতে ঢাকাতে পারে অনায়েশে


নারীই ভেনাসক্লিওপেট্রা আবার নারীই কালি
মহামানবগনের জন্মদাত্রী ফের মানবতারে দিয়েছে বলি
রহস্যময়ী নারীকে ঘিরে লেখা হয়  শত পদ্য
অন্য কিছু জানিনা হে নারীতুমি মা হিসেবে অনবদ্য

No comments: