Monday, August 3, 2020

The Lotos Eaters By Alfred Tennyson in bangla. The Lotos-Eaters bangla onubad. বাংলা অনুবাদ

The Lotos Eaters

By Alfred Tennyson

সারাংশ বা সামারি

কবিতাটির শুরুতেই ইউলিসেস তার নাবিকদের ইঙ্গিত দেয় যে শিগ্রই তারা একটি দ্বীপে পৌঁছাবে। তারপর তারা Lotos Island নামক আশ্চর্য দ্বীপে এসে পৌঁছে। এই দ্বীপে লটাস-খাদকেরা বসবাস করে। তাদের দেখে মনে হয় তারা যেন কোন মোহের মধ্যে রয়েছে। এই দ্বীপে কোন চাঞ্চল্য নেই, সবকিছুই যেন স্থবির। সমস্ত দ্বীপ-জুড়ে একধরনের ঘুমন্ত বাতাস প্রবাহিত হয়। দ্বীপে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বেশকিছু জলাধার। অস্তমিত সূর্যের লাল বর্ণ দ্বীপটিকে চমৎকার সুন্দর করে তুলে।

লাল সূর্যটি খুব ধিরে পশ্চিম আকাশে অস্ত যায়। অস্তমিত সূর্যটি পাহাড়ের চূড়া থেকে উঁকি মারে। ধূসর অন্ধকারে দ্বীপবাসীরা জাদুকরী লটাস ফল এবং ফুল নিয়ে ইউলিসেসের জাহাজের পাশে এসে হাজির হয়। সমস্ত নাবিকরা, যারা এই লটাস ফল খেয়েছে, তারা অবসাদ ও নিদ্রা অনুভব করে। তারা দুশ্চিন্তামুক্ত ও মোহগ্রস্থ হয়ে পড়ে।

[et_bloom_inline optin_id=optin_2]
নাবিকরা জাহাজ থেকে নেমে সমুদ্রপারে বসে পড়ে। সূর্যটি ঠিক তাদের সম্মুখে অস্ত যায় এবং চাঁদটি তাদের পেছনের আকাশে উঠে। সমুদ্রের কলকল ধ্বনি তাদের কাছে সংগীতের মতো শ্রুতিমধুর লাগে। তারা দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে যায় এবং মনে হয় তারা তাদের নিজেদের বাড়িতেই অবস্থান করছে। সুতরাং ট্রয়ের যুদ্ধ-ফেরত এই ক্লান্ত নাবিকরা আর তাদের সমুন্দ্রযাত্রা চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করে না। তাদের কাছে পার্থিব জীবনের সমস্ত দুঃখকষ্ট অর্থহীন হয়ে পড়ে।   

নাবিকদের গানঃ দুশ্চিন্তামুক্ত ও মোহগ্রস্থ নাবিকেরা একত্রে গেয়ে উঠে যে, এই চমৎকার ঘুমন্ত, স্থবির ও নির্ঝঞ্ঝাট দ্বীপ তাদেরকে প্রশান্তি দিয়েছে এবং তারা চায় না যে কেউ তাদের আর জ্বালাতন করুক। তাদের গানের মাধ্যমে তারা প্রশ্ন তুলে যে, যেহেতু মৃত্যু সকলের জন্যই অনিবার্য, তাই এই পার্থিব জগত অর্জনের জন্য দুঃখকষ্ট ও পরিশ্রম করা একেবারেই নিরর্থক। মন্দশক্তি ও শত্রুদের বিরুদ্ধে অনবরত যুদ্ধ কোনো সুখ-শান্তি বয়ে আনতে পারে না। সুতরাং তারা জোর দিয়ে বলে যে, যেহেতু প্রকৃতির সবকিছুই পরম বিশ্রাম ও শান্তি উপভোগ করে, তারা কেন কঠোর পরিশ্রম ও দুঃখকষ্টের শিকার হবে!

[et_bloom_inline optin_id=optin_2]  

ফুল, ফল, পাতা সবকিছুই জন্মায় এবং শান্তিতেই ঝরে পড়ে। তাদের কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই এবং তারা কোন রকম পরিশ্রম ছাড়াই জন্মায় এবং ঝরে যায়। শুধুমাত্র নির্বোধ মনুষ্যজাতিই পরিশ্রম করে মরছে। তারা যুক্তি দেয় যে, কেনই বা তারা অনর্থক পরিশ্রম করবে যেখানে লটাস-দ্বীপবাসীরা দুশ্চিন্তা-মুক্ত আলস্য উপভোগ করে।

সুতরাং ইউলিসেসের নাবিকরা যুক্তি দেয় যে তারা এই নির্ঝঞ্ঝাট দ্বীপে চিরকালের জন্য থাকতে চায়। তাদের আর বাড়ি ফিরে যাওয়ার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই, কারণ তারা সমুদ্রযাত্রা ও যুদ্ধের জন্য দীর্ঘকাল ধরে বাড়ি থেকে অনুপস্থিত। তাদের ফেলে আসা বাচ্চারা আজ বড় হয়ে গিয়েছে এবং সংসারের দায়িত্ব নিয়েছে,তাদের স্ত্রীরা হয়তো অন্য স্বামী গ্রহন করেছে। সুতরাং হঠাত উপস্থিত হয়ে নাবিকেরা আর তাদের জ্বালাতন করতে চায় না। সুতরাং এই চমৎকার দ্বীপে থেকে এর সৌন্দর্য উপভোগ করাই সর্বোত্তম কাজ হবে।  

More: The Collar Bangla Summary

তারা যথেষ্ট ভোগান্তির শিকার হয়েছে। তারা আর ভ্রমন করবেনা। এখন তাদের ক্লান্ত দেহকে বিশ্রাম দেয়ার সময় এসেছে। তারা ঈশ্বরদের মতো পাহারগুলোতে বিশ্রাম করবে। কারণ দেবতারাই তো মানুষের দুঃখকষ্ট সম্পর্কে উদাসীন। এজন্য আর ভ্রমন নয়, এখন শুধুই বিশ্রাম।



2য় আলোচনা:







ওডিসিউস তার নাবিকদেরকে সাহসী হতে বলে, তাদের আশ্বাস দিয়ে যে তারা শীঘ্রই তাদের বাড়ির তীরে পৌঁছে যাবে। দুর্বল ও শান্ত পরিবেশের কারণে তারা বিকেলে, এমন একটি জায়গায় পৌঁছায় যেখানে "সর্বদা এটি বিকেলে মনে হত"। নাবিকরা এই “স্রোতের দেশ” দেখতে পান যার ঝলমলে নদী সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়, এর তিনটি তুষার-edাকা পাহাড়ের চূড়া এবং উপত্যকায় ছায়াময় পাইন বাড়ছে।

নাবিকদের "হালকা চোখের মেলানো লোটোস-ইটাররা" স্বাগত জানায়, যার অন্ধকার মুখগুলি গোলাপী সূর্যাস্তের বিরুদ্ধে ফ্যাকাশে দেখা দেয়। এই লোটোস-ইটাররা ওডিসিয়াসের নাবিকদের দেওয়া লোটোর ফুল এবং ফল বহন করে। যারা লোটো খায় তাদের মনে হয় তারা গভীর ঘুমে পড়েছে; তারা দ্বীপের হলুদ বালির উপরে বসে তাদের সহকর্মী সামুদ্রিকদের কথায় তাদের হৃদস্পন্দনের সংগীত শুনে খুব কষ্টই বুঝতে পারে। যদিও ইথাকাতে তাদের বাড়ির স্বপ্ন দেখতে খুব মিষ্টি হয়েছে, লোটোগুলি তাদের এখানে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে, ঘুরে বেড়াতে ক্লান্ত করে তোলে। যে ব্যক্তি লোটোর ফল খেয়েছে সে ঘোষণা করে যে সে "আর ফিরে আসবে না" এবং সমস্ত মেরিনার এই লোটোস-ইটারের দেশে থাকতে এই রেজোলিউশনটি নিয়ে গান করতে শুরু করে sing
 


কবিতাটির বাকী অংশটিতে মেরিনারদের চুরিকের আটটি সংখ্যাযুক্ত স্তঞ্জ রয়েছে, যা চিরকাল থাকার জন্য তাদের রেজোলিউশনটি প্রকাশ করে। প্রথমে, তারা লোটোস-ইটারের জমির মিষ্টি এবং সূক্ষ্ম সংগীতের প্রশংসা করে, এই সংগীতটিকে পাপড়ি, শিশির, গ্রানাইট এবং ক্লান্ত চোখের পাতার সাথে তুলনা করে। দ্বিতীয় স্তরে তারা প্রশ্ন তোলে যে কেন মানুষ প্রকৃতির একমাত্র প্রাণী যাকে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে? তারা যুক্তি দেয় যে প্রকৃতির সমস্ত কিছুই বিশ্রাম নিতে এবং স্থির থাকতে সক্ষম, তবে মানুষ একটি দুঃখ থেকে অন্য দুঃখে ছুঁড়ে যায়। মানুষের অন্তর্নিহিত চেতনা তাকে বলে যে প্রশান্তি এবং প্রশান্তি একমাত্র আনন্দ দেয় এবং তবুও তিনি পরিশ্রম করতে এবং তার পুরো জীবনকে ঘুরে বেড়াতে ব্যর্থ হন।

তৃতীয় স্তরে, মেরিনাররা ঘোষণা করে যে প্রকৃতির সমস্ত কিছুকে একটি জীবনকাল বরাদ্দ করা হয় যাতে ফুল ফোটে এবং বিবর্ণ হয়। অন্যান্য জীবন্ত প্রাণীর উদাহরণ হিসাবে, তারা "ভাঁজ পাতা, যা অবশেষে হলুদ হয়ে যায় এবং পৃথিবীতে প্রবাহিত হয়, সেইসাথে" পূর্ণ রসালো আপেল ", যা শেষ পর্যন্ত মাটিতে পড়ে এবং ফুলটি পাকা হয় এবং বিবর্ণ। এরপরে, চতুর্থ স্তব্যে সামুদ্রিকরা শ্রমজীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলে, যেহেতু কিছুই ক্রমবর্ধমান হয় না এবং এইভাবে আমাদের সমস্ত অর্জন কোথাও আসে না। তারা প্রশ্ন করেন যে "কী ... স্থায়ী হবে", ঘোষণা করে যে জীবনের প্রতিটি জিনিস ক্ষণস্থায়ী এবং তাই বৃথা যায়। মেরিনাররা "দীর্ঘ বিশ্রাম বা মৃত্যুর" জন্য তাদের আকাঙ্ক্ষাও প্রকাশ করে, যার মধ্যে উভয়ই তাদের অন্তহীন শ্রমের জীবন থেকে মুক্তি দেবে।
 


পঞ্চম স্তবটি বিলাসবহুল স্ব-প্রবৃত্তির প্রতি প্রথম স্তরের ইতিবাচক আবেদন প্রতিধ্বনিত করে; অবিচ্ছিন্ন স্বপ্ন দেখে জীবন যাপন করা কতটা মধুর তা সামুদ্রিকরা ঘোষণা করে। তারা ঘুম, স্বপ্ন, লোটো খাওয়া এবং সৈকতে তরঙ্গগুলি দেখার ব্যতীত সারাদিন কিছুই না করার মতো কী হতে পারে তার একটি চিত্র তারা এঁকে দেয়। এই ধরনের অস্তিত্ব তাদেরকে সেই সমস্ত ব্যক্তিদের স্মরণে রাখতে শান্তিতে সক্ষম করবে যেগুলি তারা আগে জানত যারা এখন হয় তাকে কবর দেওয়া হয়েছে ("ঘাসের oundিবি দিয়ে apেকে দেওয়া হয়েছে") বা দাহ করা হয়েছে ("দু' মুঠো সাদা ধূলিকণা, পিতলের কুঁচকিতে আবদ্ধ!") ।

ষষ্ঠ স্তবটিতে সামুদ্রিকরা যুক্তি দিয়েছিল যে তাদের পরিবার সম্ভবত তাদের যে কোনও উপায়ে ভুলে গেছে, এবং তাদের ঘরগুলি ভেঙে পড়েছে, তাই তারা সম্ভবত লোটোস-খাওয়ার দেশে থাকতে পারে এবং "যা ভেঙে গেছে তাই থাকতে দেয়” "যদিও তাদের রয়েছে তাদের স্ত্রী এবং পুত্রদের স্মৃত স্মৃতি, অবশ্যই এখন ট্রয়ে যুদ্ধের দশ বছর পরে, তাদের ছেলেরা তাদের সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে; এটি কেবল তাদের এখন ফিরে আসার জন্য অপ্রয়োজনীয় বিভ্রান্তি ও ঝামেলা সৃষ্টি করবে। তাদের হৃদয় যুদ্ধ এবং যুদ্ধক্ষেত্রের মাধ্যমে সমুদ্রের নেভিগেশন থেকে জরাজীর্ণ এবং এইভাবে তারা প্রত্যাবর্তন বাড়ি তৈরি করবে এমন বিভ্রান্তির তুলনায় লোটোর ভূখণ্ডের শিথিল মৃত্যুর মতো অস্তিত্বকে পছন্দ করে।





তৃতীয় আলোচনা:



The Lotos Eaters - Alfred Tennyson - Summary, Analysis and Discussion - in Bengali  
The Lotos Eaters কবিতার ১ম ও ২য় অংশের গঠন এক রকম নয়। প্রথম অংশ ৯ লাইনের ৫টি স্তবকে বিভক্ত। এগুলোকে  স্পেনসারিয়ান স্তবক (Spenserian stanzas) বলে কারন স্পেনসার (Edmund Spencer) তার দ্যা ফেয়ারী কুইন (The Faerie Queene) এ এই ধরনের ৯ লাইনের স্তবক ব্যবহার করেছিলেন। এই স্তবকগুলোতে ছন্দ বিন্যাস ‘ABABBCBCC’ এই স্তবক গুলোর ১ম ৮ লাইন এর মাত্রা হল ‘iambic pentameter’ বা পঞ্চমাত্রিক। কিন্তু ৯ম লাইনটি ৬ মাত্রার। এটা ‘alexandrine’ নামে পরিচিত। ২য় অংশটি - যা নাবিকদের সমবেত সঙ্গীত (CHORIC SONG) নামে পরিচিত। এর গঠন এলোমেলো। এর কোন মাত্রাবিন্যাসও নেই।

 
আলফ্রেড লর্ড টেনিসন তাঁর ‘দ্যা লটোস ইটার’ কবিতায় একদল নাবিকের অন্তহীন সমুদ্রযাত্রা শেষে অজানা এক স্থানে অবতরণ করার কথা বলেছেন। গ্রীক পুরাকাহিনী দ্বারা প্রভাবিত এ কবিতায় আমরা হোমারের ওডিসি মহাকাব্যের একজন নায়ক ইউলিসিসের গৃহে ফেরা প্রত্যক্ষ করি। হোমারের অডিসি মহাকাব্যের নায়ক অডিসিয়াস (ইউলিসিস) ট্রয় যুদ্ধ শেষে তিনি দেশে ফেরার পথে জাহাজসহ নাবিকদের নিয়ে নানা বাধা বিপত্তির মুখোমুখি হন। আটকা পড়ে থাকেন নানা সময়ে নানা দ্বীপে। নাবিক দল সীমাহীন সমুদ্র পাড়ি দিয়ে তারা যেন ক্লান্ত অবসন্ন। এভাবেই কাটতে থাকে বছরের পর বছর। তার সঙ্গী নাবিকেরা ঘরে ফেরার তরে আকুল। কিন্তু সহজে ফেরা হয় না তাদের। তাদের জাহাজ বার বার আটকে যায় নানা বাধা বিপত্তির মুখে। এ কবিতায় সেই সব হতাশ নাবিকদের মনের আর্তির প্রকাশ ঘটানো হয়েছে। কবি টেনিসন তাঁর এ কবিতায় ইউলিসিসের সঙ্গী নাবিকদের হৃদয়ের মর্মবেদনা এবং শেষে বাড়ি ফেরার চিন্তা চেতনার হাল ছেড়ে দেয়ার অসহায় দিকটির অসাধারণ প্রকাশ ঘটিয়েছেন।

 

কবিতাটি শুরু হয়েছে  ইউলিসিস এর একটি আদেশের মাধ্যমে, যেখানে তিনি তার নাবিকদেরকে সাহস রাখতে বলছিলেন। কারন তারা অনেক দূর থেকে একটি নতুন দ্বীপের দেখা পেয়েছিলেন। অবশেষে সেদিন বিকেলবেলা তারা এই দ্বীপে প্রবেশ করেন। যেখানে চিরকাল যেন বিকেল বেলা বিদ্যমান। যেখানে ঝলমলে বহমান নদী সাগরের সাথে মিশেছে। পাহাড় চুড়া গুলো ছিল তুষারাবৃত। সেখানে মায়াময় নিরীহ দৃষ্টির লটোস খাদকদের (mild-eyed melancholy Lotos-eaters) সাথে তাদের দেখা। তারা তাদের কাছে লটোস ফুল আর ফল নিয়ে আসে। যারাই এই লটোস ফুল বা ফল খায় তারাই যেনো এক গভীর আচ্ছন্নতায় ভোগে। সবকিছু কেমন স্বপ্নের মতো মনে হয়। পাশের মানুষের কথাও ভালো ভাবে বুঝা যায় না। মনে হয় যেনো ইথাকায় [তাদের আবাসস্থল] বসে বসে তারা সুন্দর স্বপ্ন দেখছে। তাদেরকে একরাশ ক্লান্তি চেপে ধরে। যেই এই ফল খেয়েছে তার মুখ থেকেই বের হয় একই কথা, ‘আর বাড়ি ফিরবো না।’
নাবিকগণ হাল ছেড়ে দিয়ে নিজ গৃহের আশা ত্যাগ করে নিজেরাই নিজেদের মাঝে সাহস সঞ্চয় করার চেষ্টা করছেন। তারা চায় নিরাপদ আশ্রয়, নিরাপদ তন্দ্রা আর অপার শান্তি। তারা জানে, সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে দ্রুত কিন্তু ফেরার কোনো পথ খোলা নেই। তাই তারা নিজেদের সান্ত্বনা দিচ্ছে এই বলে যে, শুধু অহেতুক বিলাপ করার কোনো অর্থ নেই, তার চেয়ে এই ভালো, এই সীমাহীন সমুদ্র, এই নির্জন দ্বীপ, তারার আকাশ, জলের কুলকুল ধ্বনি, উত্তাল তরঙ্গমালা এসব দেখে দেখেই সময় পার করবে। শেষের স্তবকগুলোতে কবি তাদের বানোয়াট দেবদেবীদের সমালোচনা করেছেন। তারা ইলাইসিয়ামে বসে/শুয়ে মদে চূড় হয়ে আছে কিন্তু মানবজাতীর প্রতি তাদের কোন চিন্তা নেই। তারা নিজেদের মাঝে ঝগড়া ও কলহে ব্যস্ত আর এর সাথে পৃথিবীর মানুষদেরও দূর্ভোগ সৃষ্টি করছে। 

 
তারা ভাবে সময় তো অনেক পার হয়ে গেছে, তাদের স্ত্রী সন্তানদের কাছে তখন ফিরে গেলে তাদেরকে ওরা ভূত বলে সন্দেহ করবে, সন্তান আর পরিবারের শান্তি নষ্টের কারণ হবে । তারা ভাবে যা ভেঙ্গে গেছে সেটা তেমনি থাক,  এই সীমাহীন সমুদ্রের এই দ্বীপে লটোস আহার করে প্রকৃতির শোভা নিরীক্ষণ করবে আজীবন। নাবিকরা কামনা করছে এখন একান্ত বিশ্রাম তারা দেখেছে যুদ্ধ, হানাহানি, শুনেছে সমুদ্রের ভয়াল গর্জন, এবার আর তারা সমুদ্রে যেতে চায় না, যত দিন বেঁচে থাকবে তারা এই দ্বীপে থাকতে চায় দৌড়ে বেড়াতে চায় শস্য ক্ষেতের ভেতরে, মিশে যেতে চায় প্রকৃতির সাথে, আর তারা নিজেদের যুক্ত করতে চায় না কঠোর শ্রমে। গৃহ আজ তাদের কাছে অতীত ইতিহাস। কোনোদিন হয়তো সেখানে ফেরা হবে না তাদের। মোট কথা, কবি টেনিসন তাঁর ‘The Lotos Eaters’ কবিতায় ট্রয় যুদ্ধ ফেরত একদল নাবিকের অসহায়ত্বের মাধ্যমে তাদের সান্ত্বনা খোঁজার দিকটি পরম নিষ্ঠার সাথে তুলে ধরেছেন।
পৃথিবীতে মানুষ তার দীর্ঘ সময় কাটায় নানা কর্ম প্রবাহের মাঝে, পাড়ি দেয় জীবনের অনেকটা পথ। জীবনের পথে পথে চলতে গিয়ে সে প্রত্যক্ষ করে কতো না আনন্দের উৎস, কতো না বিস্ময়, কতো না হতাশা, শেষে তার মন ক্লান্ত হয় নিজের মধ্যে ফেরার জন্য কর্মকাণ্ড দিনের শেষে মানব চায় এক দণ্ড শান্তি। একটু নিরুপদ্রবে নিদ্রায় ঢলে পড়তে চায়। কারণ জীবনের পথ পাড়ি দিতে দিতে সে আজ বড়োই ক্লান্ত। মানব জীবনের এই অন্তহীন পথ চলা এবং তার বিশ্রামের যে চিরন্তন আকাঙ্ক্ষা সেই আদি বিষয়টিই প্রকাশ হয়েছে এই কবিতায়!

No comments: