Wednesday, December 4, 2019

রিফিউজি
অমিতাভ দাস



রক্ত ঝরছে!
নদীগুলো স্রোত হারাতে হারাতে মজে গেছে
সমস্ত মুখোশে মাখামাখি উদ্দাম সময়
রক্ত মিশছে!

ঘটি বাটি দিয়ে গড়ে তোলা সংসার বেওয়ারিস হয়ে যাবে যেকোনো দিন,
সীমানার পর সীমানা পেরিয়ে যাবে অথচ খুঁজে পাবে না কোনো দেশ,
নিজের দেশ!!

এতদিন তো বেঁহুশ ছিলে বোঝা যায়,এখনও কি আছো?
থাকবে এভাবে বহুদিন?

রক্ত ঝরছে!
ধীরে ধীরে ঝাপসা হচ্ছে দৃষ্টি
চোখ ধুয়ে নেব বলে একটা নদী খুঁজছি
এদিকে সব স্রোতে রক্ত মাখামাখি!

(অমিতাভ দাস                                                                           40/এ বাকসাড়া রোড,বাকসাড়া,হাওড়া - 



🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄

বিভাগ: গল্প

বহুবর্ণ ভালোবাসা
রিয়া মিত্র



মুডটা একদম ঠিক নেই স্বয়ংসিদ্ধার। দিন দুয়েকের জন্য বন্ধুদের সাথে শান্তিনিকেতন ঘুরতে এসেছে সে। মাথাটা বেশ কয়েক দিন ধরেই ঝিমঝিম্ করছে। লাল-মাটির দেশে কবির শান্তির ছায়ায় অন্তত দিন দুয়েকের জন্য নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চায় সে।
খোয়াইয়ের ধারে আপন মনেই হাঁটছিল সে। সৃজা আর আয়ুশী গেছে সোনাঝুরির হাটে। হাটের কাছাকাছি একটি রিসর্টেই ওরা উঠেছে। ডুবে যাওয়ার আগে শেষবারের মতো সূর্য তার রক্তিম আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে আর সেই আলোয় বল্লভপুরের লাল মাটি যেন নিজেকে আরও রাঙিয়ে নিচ্ছে।
অস্তরাগের সাথে ওর পরিচয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে। ভীষণ বাস্তববাদী মেয়ে সে, ফেসবুক-প্রেমকে খুব একটা ভরসা করে না কিন্তু অস্তরাগের প্রতি এক অমোঘ টান অনুভব করত সে। বন্ধুত্ব দিয়ে শুরু হলেও ধীরে ধীরে চ্যাটিং বাড়তে থাকে। কখনো সামনাসামনি কেউ কাউকে দেখে নি কিন্তু ফোনে কথা বলে বা চ্যাট্ করেও অস্তরাগকে খুব আপন মনে হয়। তার মতো মেয়ে এ'ভাবে কারও প্রেমে পড়বে, এ তো তার নিজেরও বিশ্বাস হয় না।
দিন সাতেক হলো, অস্তরাগ তার সাথে সামনাসামনি দেখা করতে চেয়েছে কিন্তু আশ্চর্য রকমভাবে সে নিজে চাইছে না দেখা করতে। কেন? তা কি সে আদৌ কাউকে বোঝাতে পারবে? অস্তরাগের প্রতি সে একটা নৈসর্গিক প্রেম অনুভব করে। এই যে দূরত্ব, না দেখা, চেয়েও না পাওয়া, এ'টা খুব এনজয় করে সে। হয়তো এই ফিলিংসটার জন্যই এইরকম প্রেমে সে এত আগ্ৰহী হয়েছে। দেখা হলে, সহজলভ্য হয়ে গেলে যদি এই আকর্ষণ না থাকে? যদি কেন, সে নিশ্চিত জানে, যে জিনিস সহজলভ্য তার প্রতি মানুষ আগ্ৰহ হারিয়ে ফেলে বরং অধরা জিনিসের প্রতি মানুষের কৌতূহল চিরকালীন। এই 'কসমিক্ লাভ্' জাতীয় ব্যাপারটি অন্যান্য কাউকে বোঝানো বা ফিল্ করানো বেশ কঠিন। সব ক্ষেত্রেই যে'খানে কাপলরা একে অপরের সাথে দেখা করতে চায়, মনের থেকে ধীরে ধীরে শরীর প্রাধান্য পেতে থাকে, সে'খানে এই উচ্চমার্গের ভালোবাসার কথায় সকলেই প্রায় হেসে ওঠে। অস্তরাগকে কথাটা ভয়ে ভয়ে বলতেই সে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে চুপ করে রইলো। তারপর নিজেই বলল, "তুমি আমাকে ভালোবাসো তো, স্বয়ং?" স্বয়ংসিদ্ধা চমকে উঠে বলেছিল, "এ কেমন ধরণের কথা বলছ তুমি, অস্ত? তুমি আমার ভালোবাসার আশ্রয়স্থল। তোমাকে আমি ভালোবাসি না?????!!!!!" আকুল হয়ে অস্তরাগ বলে উঠেছিল, "তাহলে কেন দেখা করতে চাও না তুমি আমার সাথে? আমি তোমার সাথে দেখা করে তোমায় আরও কাছে পেতে চাই, আমার নিবিড় ভালোবাসায় তোমার হৃদয় পরিপূর্ণ করে দিতে চাই। তুমি কী আমাকে পেতে চাও না?!" খুব অসহায়ভাবে স্বয়ংসিদ্ধা বলেছিল, "কীভাবে তোমাকে বোঝাই, অস্ত? এই না পাওয়াটাই যে আমাদের সম্পর্কটাকে চিরনতুন রাখবে, কখনো বিরক্তি আনবে না।" অস্তরাগ ওকে বোঝানোর শেষ চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বলল, "তোমার লাইফে কী অন্য কেউ এসেছে? আই মিন্, আসতেই পারে, আমাকে সে'টা বলে দাও তুমি নাহলে প্রতিটি ভালোবাসার সম্পর্কে শরীর আসাটা অনিবার্য আর তোমার দিক থেকে আমি সে'রকম কোনো সাড়াই পাচ্ছি না!!" স্বয়ংসিদ্ধা চুপ করে ছিল। কীভাবে ওর মনের কথা ও বোঝাবে? মনের মধ্যে তখন অণুরণন হচ্ছিল একটাই কথা, ''শরীর, শরীর, তোমার কি মন নাই??!!" অস্তরাগকে যে সেও শারীরিকভাবে পেতে চায় না, তা নয় কিন্তু পাওয়া হয়ে যাওয়ার পর যদি ওদের সম্পর্কে আর কিছু না থাকে অবশিষ্ট?! তখন ওর কী হবে?! অধরাকে নিয়েই যে ও স্বপ্নের জাল বোনে, সহজলভ্যকে নিয়ে যে স্বপ্নও ধরা দেয় না। তার থেকে বরং এই ভালো। না পেয়ে পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে দূর থেকে বেঁচে থাকা!
ধীরে ধীরে সন্ধ্যে নামছে লাল মাটির দেশে। দূর থেকে পথিক বাউলের গান ভেসে আসছে কানে। ধুলো উড়িয়ে কয়েকটি ভ্যান্-গাড়ি চলে গেল পাশ দিয়ে। হাঁটতে হাঁটতে উপাসনা-গৃহের কাছাকাছি চলে এলো স্বয়ংসিদ্ধা। সাধারণত সন্ধ্যাবেলা উপাসনা হয় না। কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে যেমন কোনো বিশেষ ব্যক্তিকে স্মরণ করার উদ্দেশ্যে মাঝে মধ্যে খোলা রাখা হয়। আজও হয়তো সে'রকমই কিছু একটা হবে। গোধূলি বাতাসে প্রার্থনা-সঙ্গীত ভেসে আসছে। অস্তরাগ কাল শেষ কথা বলেছিল। গলায় সন্দেহের বিষ ঢেলে বলেছিল, "স্বয়ং, আমার মনে হয় তোমার এ'টা ফেক্ আইডি নাহলে কেন তুমি আমার সাথে দেখা করতে চাইছ না, বলো।" স্বয়ংসিদ্ধা বলেছিল, "তুমি আমার ফিলিংস বুঝবে না, অস্ত। যদি আমাকে বিশ্বাসই না করতে পারো, তবে তোমার কেমন ভালোবাসা?" অস্তরাগ খুব রেগে গিয়ে বলেছিল, "তুমি পাগল হয়ে গেছ, স্বয়ং। এ'রকম কল্পনাবিলাসী হয়ে তুমি বাস্তবের সম্পর্কগুলো টিকিয়ে রাখবে কী করে?! থাকো তুমি তোমার কল্পনার জগতে।" বলে ফোন রেখে দিয়েছিল। আজ এখনও অবধি কোনো ফোন করে নি অস্তরাগ। দূর থেকে সৃজা আর আয়ুশীকে আসতে দেখলো ও। দু'জনেরই হাত-ভর্তি জিনিস। প্রচুর কেনাকাটা করেছে সোনাঝুরির হাট থেকে। ওর দিকে তাকিয়ে সৃজা বলল, "হলো তোর খোয়াই-ভ্রমণ?" স্বয়ংসিদ্ধা আলতো হেসে বলল, "হুম্, চল্, রিসর্টে ফেরা যাক্।"
রাতে খেয়ে উঠে রিসর্টের সামনের খোলা বাগানে এসে বসলো স্বয়ংসিদ্ধা। পূর্ণিমার রাত। আশেপাশে চারিদিকেই নিস্তব্ধ। এ'খানকার মানুষেরা তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পড়ে। দূরে অন্ধকারে গাছের সারিগুলো আজন্মকালের পথিকের মতো আকাশের দিকে তাকিয়ে চাঁদের জ্যোৎস্না পান করছে। সে'খান থেকে একটানা ঝিঁঝিঁ ডেকে চলেছে। আর কিছুদিনের মধ্যেই শীত পড়ে যাবে। দূরে হাল্কা কুয়াশা রয়েছে। রাতের নিঃঝুম সৌন্দর্য পান করতে করতে স্বয়ংসিদ্ধার কল্পনাবিলাসী মন কোথায় হারিয়ে গেছিল, তা নিজেও ও টের পায়নি। পাশে কখন সৃজা আর আয়ুশী এসে বসেছে, বুঝতেই পারে নি। আয়ুশী বলল, "কি রে, কী হয়েছে তোর, বল্ তো? এত আনমনা কেন তুই?" স্বয়ংসিদ্ধা বলল, "না রে, সে'রকম কিছু নয়। একটু মুডটা অফ্।"
-- হ্যাঁ, সে তো বুঝতেই পারছি কিন্তু কেন?
স্বয়ংসিদ্ধা সব বলল ওদের। সৃজা হেসে বলল, "ওহ্ এই ব্যাপার?! এ'টা কোনো সমস্যাই নয় তোর।" স্বয়ংসিদ্ধা অবাক হয়ে বলল, "সমস্যা নয় বলছিস্? আমার কাছে পাহাড় ডিঙোনোর থেকেও বড় সমস্যা। একদিকে আমি বুঝতে পারছি যে, অস্তরাগ যা বলছে, তা খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। দেখা তো করতে চাইবেই ও কিন্তু আমার কেবল মনে হচ্ছে, দেখা হলে যদি আমাদের প্রেমের আকর্ষণ কমে যায়?"
-- তোর কী নিজের ভালোবাসার ওপর ভরসা নেই? পৃথিবীর সব মানুষের মধ্যে কী দেখা হওয়ার পর ভালোবাসা কমে গেছে?
-- আমার মনে হয়, কোথাও একটা ধীরে ধীরে কমতে থাকে ভালোবাসা। মানুষ অভ্যস্ত হয়ে ওঠে বলে বুঝতে পারে না।
-- যদি তাই হয়, তবে তোর সাথেও তাই হবে। এতে চিন্তার কী আছে?
-- কোনো পার্থিব ভালোবাসার অনুভূতি আমার ওর প্রতি আসে না, রে। আমি উপলব্ধি করি ওর প্রতি আমার এক নৈসর্গিক প্রেম। ও'টা যদি অভ্যাসে পরিণত হয়, তবে আমার সেই অনুভূতিটাই চলে যাবে। হয়তো ও নিজের কল্পনায় আমার এক ধরণের রূপ এঁকেছে বা আমিও নিজের কল্পনায় ওকে একরকম এঁকেছি কিন্তু দেখা হওয়ার পর যদি সেই কল্পনা বাস্তবের সাথে না মেলে, তখন যে কল্পনা ভাঙার কষ্টটা খুব বাজবে বুকে।
-- নিজের ভালোবাসার ওপর ভরসা রাখ্। জানিস্ তো, তোকে দেখে আমার গ্ৰীসের পরমা সুন্দরী রাজকন্যা সাইকির কথা মনে পড়ছে।
-- কেন?!
-- তার ভালোবাসাকে ঘিরে রয়েছে এক কাহিনী।
স্বয়ংসিদ্ধা উৎসাহিত হয়ে বলল, "কী সেই কাহিনী?" সৃজা বাগানের দোলনার ওপর ভালো করে পা গুটিয়ে বসে শুরু করলো, "গ্ৰীক, রোমান ও ল্যাটিন পুরাণের খুব বিখ্যাত একটি চরিত্র দেবী সাইকি। মর্ত্যের মানবী রূপে তিনি জন্মালেও তিনি দেবীর মর্যাদা লাভ করেছিলেন নিজের সৌন্দর্যের কারণে। তার পিতৃপরিচয় সঠিক জানা যায় না। সাইকি ছিলেন পরমা সুন্দরী এক রাজকন্যা। তিন বোনের মাঝে সবার ছোট আর সবচেয়ে সুন্দরী। তার সৌন্দর্য গ্ৰীসের সৌন্দর্যের দেবী ভেনাসকে বা আফ্রোদিতিকেও হার মানিয়ে দিত। মানুষ আফ্রোদিতিকে রেখে সাইকির পূজা শুরু করে দেয়। ফলে তিনি ক্ষেপে গিয়ে ছেলে কিউপিডকে আদেশ করেন, কিউপিড যেন তার প্রেমের তীর দ্বারা সাইকিকে খুব ভয়াল কোন দানবের প্রেমে পড়তে বাধ্য করেন। কিউপিডের সেই ক্ষমতা ভালোভাবেই ছিল কিন্তু এই কাজ করতে গিয়ে তিনি নিজেই সাইকির রূপসৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তার প্রেমে পড়ে যান। ঘটনাক্রমে তাকে বিয়ে করে স্বর্গে নিজের প্রাসাদে রাখেন কিন্তু কিউপিড তখনো পর্যন্ত সাইকিকে নিজের চেহারা দেখাননি। সাইকি জানেননা তার স্বামীর পরিচয়।
-- কেন? কিউপিড সাইকিকে নিজের পরিচয় কেন দিলেন না?
-- কারণ কিউপিড আর সাইকির দু'জনের ওপরই ছিল অভিশাপ। নিজের মায়ের অভিশাপে কিউপিড কখনো নিজের আত্মপরিচয় দিয়ে সাইকির সাথে মিলিত হতে পারবেন না আর সাইকিও কোনো ভয়ানক দানবের প্রেমে পড়বেন। তাই, কিউপিড কখনো নিজের পরিচয় দিতেন না। রাতের অন্ধকারে তিনি তার স্ত্রীর সাথে মিলিত হতেন আর সাইকিও ভাবতেন যে, এই বুঝি তার দানব-স্বামী। তাই, লজ্জায় নিজের পরিচয় দিতে চাইছেন না। কিউপিড সাইকিকে বারবার অনুরোধ করেছিলেন যে, তার পরিচয় না জানার চেষ্টা করতে, তাতে অমঙ্গল হবে। এ'ভাবেই চলছিল কিন্তু নিজের অদম্য কৌতূহলে এক রাতে সাইকি ঘুমন্ত স্বামীকে প্রদীপ জ্বেলে দেখার চেষ্টা করলেন এবং আবিষ্কার করলেন যে, তার স্বামী আর কেউ নয় স্বয়ং ভালবাসার দেবতা পরম সুদর্শন কিউপিড। হঠাৎ করেই এক ফোঁটা তেল কিউপিডের ঘাড়ে পড়ে তার ঘুম ভেঙে যায় আর তিনি দ্রুত নিজের ডানা প্রসারণ করে চলে যেতে উদ্যত হন। সাইকি তার পা ধরে অনুরোধ করেন যে, যেন সে তাকে ছেড়ে না যায়, তার ভুল হয়ে গেছে। কিউপিড বলেন যে, যে'খানে ভালোবাসায় বিশ্বাস নেই, সে'খানে তিনি আর থাকবেন না। তার ভালোবাসা কী কিছুই নয় যে, তার মুখ দেখার এত প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল সাইকির। অভিশাপ অনুযায়ী তাই তাকে সাইকিকে ছেড়ে চলে যেতেই হবে।"
-- তারপর? ওরা কী অভিশাপমুক্ত হয়ে আর মিলিত হতে পেরেছিল?
-- বিশ্বাস ভালোবাসায় খুব বড় বিষয়। সে'টা না থাকলে কোনো ভালোবাসাই টেকে না, তা সে পুরাণের ভালোবাসাই হোক্ বা তোদের ভালোবাসাই হোক্। অনেক বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে ওরা নিজেদের অভিশাপ কাটিয়ে শেষ অবধি মিলিত হতে পেরেছিল। তাই, তোকেও বলছি নিজের ভালোবাসার ওপরে ভরসা রাখ্ আর দর্শনটা ভালোবাসার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলে না। ভালোবাসার তীব্রতা প্রথম প্রথম যতটা বেশি থাকে, সে'টা খুব স্বাভাবিক কারণেই আস্তে আস্তে তার তীব্রতার মাত্রা কমাতে থাকে কিন্তু তার কারণ কখনো দর্শন হতে পারে না, রে বোকা। তুই দেখা কর্। কল্পনা আর বাস্তবের মিশেলে তোরা একে অপরের কাছে ধরা দিবি। দেখবি, তোদের সম্পর্ক আরও সুন্দর হয়ে উঠবে। 
একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে স্বয়ংসিদ্ধা সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলো, ভোরের আলো ফুটছে। গ্ৰীক পুরাণের গল্প শুনতে শুনতে কখন রাত পেরিয়ে ভোর হয়েছে, ওরা কেউই খেয়াল করে নি। দূরের শাল গাছগুলোর ফাঁক দিয়ে আলোর রেখা এসে পড়েছে ওদের পায়ের কাছে। সৃজা আর আয়ুশী ঘুমাতে চলে গেল। স্বয়ংসিদ্ধা হাঁটতে হাঁটতে খোয়াইয়ের দিকে গেল। সূর্যের লাল আলো আবার খোয়াইয়ের লাল মাটিতে পড়েছে। এ'বার আর সূর্যাস্তের লাল রং নয়, এ'বার সূর্যোদয়ের অরুণ আলোয় রক্তিম হয়ে উঠেছে লাল মাটির পাথর। সেই রং ওর মনে এসেও ছুঁয়ে গেল। দূরে বাসা ছেড়ে নিজেদের ডানার ওপর ভরসা করে পাখির দল আকাশপথে যাত্রা শুরু করলো। সত্যি, বিশ্বাস-ভরসা এ'সবই তো সব সম্পর্কের মূল ভিত্তি। টুং করে ওর মোবাইলে একটা মেসেজ ঢুকল। ও তাকিয়ে দেখল, অস্তরাগ 'গুড্ মর্নিং' উইশ্ করেছে। বাব্বাহ্, বাবুর রাগ কমলো তবে। নাহ্, কালই কলকাতায় ফিরে অস্তরাগের মনের মতো করে সেজে ওর সাথে এ'বার দেখাটা করেই ফেলবে স্বয়ংসিদ্ধা......


No comments: