একটি ইতিবৃত্ত বিষয়ক
প্রসাদ রায়
দৌড়স্বপ্নের সূর্যোদয় ঘটে মায়াহরিণ_পশ্চাতে,এক অচেনা দিগন্তে
অস্পষ্ট দিক চক্রবাল রেখা
জন্মাবধি এ বার্তা থাকে মূক বধিরের মতো
এরইমাঝে,কথাদের ঈর্ষাময় করি কাঠঠোকরার ঠোঁটে
যদি কিছু সারাৎসার পাওয়া যায়
এ বুঝি এক প্রলুদ্ধ বাসনা
মধ্যে বহে চলে নিঃশব্দে এক নদী,যার জলে চাঁদের ছায়া পড়ে না
ভেঙে যায় আয়ূ থেকে আয়ূ
শেষমেশ, অদৃশ্যে থেকে কেউ অমোঘ ঘন্টি বাজিয়ে দেয় এ ইতিবৃত্ত,গল্প শেষের৷
থেকেঃপ্রসাদ রায়/আড়গোড়ি পল্লীশ্রী/আন্দুল মৌড়ি/হাওড়া_৭১১৩০২
🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄
অশ্রুঝরা ভ্রমণ
আহমাদ কাশফী
মধ্যরাত,
শহরের ষ্টেশন থেকে মফস্বলের উদ্দেশ্যে শেষ ট্রেনটি ছেড়ে গেছে।
সকাল দশঘটিকার আগে আর কোন ট্রেন মফস্বলে যাবে না। কিন্তু, আমাকে এর আগেই পৌঁছুতে হবে।
ভেবেচিন্তে কিছুক্ষণ পর...
আমি রেললাইন ধরে সুবোধ বালকের মতো হাঁটতে লাগলাম।ক্রমশ রেললাইন অন্ধকার হয়ে আসলো।আমি অন্ধকার পথ ধরে হাঁটতে লাগলাম।কুয়াশাচ্ছন্ন শীতে শূণ্য রেলপথ দিয়ে মাথায় কালোরঙা জ্যাকেটের মস্তকঘেরা হেলমেট লাগিয়ে দৃষ্টি অবনত করে আমি হেঁটে চলছি।
এটা আমার শহুরে রেলপথ অতিক্রমের গল্প..
তখন শেষরাত্রি প্রায়..
পশ্চিমাকাশে লালিমা রেখার অস্পষ্টতা কেটে যাচ্ছে।
রাত্রির ভয়ানক অভিজ্ঞতার পর এবার আমার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার কথা ছিলো।
কিন্তু,
এখন আমার ক্রমশ ভয় করতে শুরু করছে।
পাশের বস্তি থেকে শিশু,যুবতী ও বৃদ্ধ নারীদের কান্নার শব্দ ভেসে আসছে। শব্দটি ধীরেধীরে রূপ পরিবর্তন করছে, ভয়ের স্থান দখল করছে মানবতা!
হ্যা,
শব্দগুলো কোন প্রেতাত্মার নয়, শব্দগুলো আমার মতই দু'পেয়ে মানুষের।
ওদের অপরাধ ওরা ধর্ষিতা,ওরা সমাজের বোঝা।
তাই,ওরা দু'মুঠো ভাতের আশায় পতিতালয়ে পরে থাকে।
খদ্দের পেলে তৃষ্ণা ও ক্ষুধা মিটে,না পেলে অভুক্ত ও তৃষ্ণার্ত হয়ে পরে থাকে।ক্ষুধার যন্ত্রণায় গোঙাতে থাকে।
অবশেষে,
ভোঁরে মসজিদের আজানের সাথে মিশে একাকার হয়ে যায় গোঙানি।প্রতিদিন কেউ না কেউ মৃত্যুবরণ করে, কাফন,জানাজাহীন দাফন হয় ওদের মানবদেহ। দূর থেকে সবাই নাক ছিটকে চলে যায়।
তবে কি ওরা মানুষ নয়.??
খদ্দের ভেবে আমাকে দেখে ওদের কয়েকজন দৌঁড়ে আসলো ,ওদের চাহনি দেখে মনে হলো শুধু আকাশে নয় পতিতালয়েও অাজ চাঁদ উঠেছে। সবাই কাড়াকাড়ি শুরু করছে, আমার কাছে এসো,আমার কাছে এসো....
'খদ্দের নইরে আমি...
মানবতার খাতিরে খোঁজ নিতাম এলাম।' বললাম আমি।
ওরা হাসাহাসি করছে, যেন বিশ্বাস হচ্ছে না।মানবতা শব্দটি অনেক আগেই পৃথিবীর সমস্ত অভিধান থেকে মুছে গেছে বলেই ওদের ধারনা।
আমি কিছুটা বিব্রত বোধ করলাম।খানিক পরেই নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম,তোমরা আমার মা আর তোমাদের পিতৃপরিচয়হীন সন্তানরা আমার ভাই,আমার বোন।
এবার কিছুটা আশ্বস্ত হলো ওরা।বলতে শুরু করলো জীবনযাত্রার কান্নাজড়া গল্প।ওরা কাদছে, আমারও কান্না পাচ্ছে,ওদের চোখের পাতা ভিজে গেছে, আমারও চোখের পাতা ভিজে গেছে,ওদের গাল বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরছে,আমারও গাল বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরছে।
No comments:
Post a Comment