Tuesday, November 12, 2019



দীর্ঘশ্বাস

নিঃশব্দ আহামদ



অভিমান করে আছিস,জানি৷সারাদিন কোনো খবর পাইনি তোর,আমিও নিতে পারিনি৷অনেকবার ফোন হাতে তুলে নিছি,তোকে ডাকবো বলে,এই দুর্যোগের কবলে বিদ্যুৎ ছিলো না৷সে যাই হোক,সারাদিন একটা অস্থিরতার ভেতর গেলো৷তোরও এমন ছটফট অস্থিরতা হয়,দ্যাখেছি অনেকবার৷এসব ছটফটানিতে রোজ অসুস্থ হই,শুয়ে থাকি৷তবু অনন্ত ঘুম আসেনা৷

জানিস,এই যে আমার চোখ আছে না৷তার পুরোটায় সারাক্ষণ ক্যামন এক দৃশ্যের মতো ছড়িয়ে আছে তোর শহর,ফুটপাথ,অটোগুলো কেমন ছুটে যাচ্ছে তীব্র গতিতে৷কখনো তুই বলছিস,আস্তে যাও দাদা৷এসব ভেবে ভেবে আমি নিজের ভেতর একটা গল্প তৈরি করে নিই,কিংবা উপন্যাস অথবা স্থির চিত্র পুরোটা ছড়িয়ে আছে চোখের ইথারে৷

ভাবছিস খুউব৷এমনো ভাবছিস কখনো ,তোকে আড়াল করে জমছে ভাব কোথাও খুঊব করে৷না রে,এই যে বেরোলাম ৷বিকেল থেকে সবে সন্ধ্যা হতে চললো৷চারদিক কেমন গুমোট হয়ে আছে,ভয়ার্ত হাওয়া৷এসব হাওয়ায় বিপদ আসে,কান্নায় কোথাও ফুয়ারা সাজে চোখ,মৃত্যুপাশে৷আমারও কেমন জানি,অমন এক সন্ধ্যায় চলে যেতে ইচ্ছে করে ৷হয় তোর কাছে ,নয়তো কান্নার মতো জল হয়ে চিরতরে৷এমাথা,তেমাথা ঘুরে টঙের কাছে চা,সিগারেট টেনে,উড়াতে থাকি অনেকটা দীর্ঘশ্বাস৷এসব দীর্ঘশ্বাস উড়াতে হয়,নয়তো দম বন্ধ হয়ে একদিন খুউব করে চলে যাবো,সে দিন থেকে তোর কোনো অপেক্ষা দেখবো না বলে আমার আর মৃত্যু এলো না৷

তারপর বড় ভাইয়ের মতো ভিজে এলাম৷শৈশবে আমাদের অন্ন যোগাড়ে বড় ভাই কাকভোরে বেরিয়ে যেতেন৷সারাদিনের শ্রান্তি,ক্লান্তি নিয়ে তিনি ভিজে আসতেন৷তার ভেজা শরীরের একটা ঘ্রাণ ছিলো৷যা আমি বারবার নিঃশ্বাস ভরে নিতাম৷পবিত্র এ ঘ্রাণ৷নির্মোহ মানুষটির কথা মনে এলেই আমার ভিজতে ইচ্ছে করে,রোদে পুড়তে ইচ্ছে করে,জমিতে হাল দিতে ইচ্ছে করে৷আমার কোনো ইচ্ছেই আজ অবধি পূরণ হয়নি৷জোড়াতালির জীবনখানি যেনো একটি পোশাক হয়ে ফিরে দর্জি বাড়ি বারবার৷যেমন সেলাই হয়,তাতেই আর উঠছেনা নতুন জামা৷নতুনে শুধু শূন্য দ্যাখি,তোর মতো অমন আগ্রহের আর কোনো স্বতঃস্ফুর্ত চোখ আমার আর দ্যাখা হয়নি৷তাই দিনশেষে রাতের বাড়ি এলে তোকেই খুঁজতে ইচ্ছে করে,এটা ওটা তুলে রাখি৷আর তোকে রাখি চোখের পাতায়৷দ্যাখনা,তাই এতোটা রাত হলেও ঘুম আমার এলো না৷বরাবরই আমার ঘুম অসুখ৷এভাবে ঘুম সন্ধানে জাগতে জাগতে দীর্ঘরাত একদিন ঘুমের অতলান্তে হারিয়ে যাবো শুধু সংবরণ করিস তোর চোখজল৷

সারক্ষণই এটা ওটা নিয়ে চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়ি৷জানিস তো চিন্তা থেকে চিন্তার উৎপত্তি৷অসংখ্য এমনো চিন্তা থেকে দূঃশ্চিন্তা হতে থাকে৷আর সবচে দূরারোগ্য এই দুঃশ্চিন্তা৷ঘুম হারায়,আরাম হারায়,শরীর হালকা হয়,ক্লান্তি আসে৷টলতে থাকে আপাদমস্তক৷ভনভন ঘুরে একটা পুরো ভূ মন্ডল মাথার ওপর৷কখনো ভিজে চোখ,জলের আবছায় ঘনায় রাত৷মৃত্যু মৃত্যু লাগে৷মরি না৷আবার বাঁচি ও তো না৷ঠিক কি বলে তাকে?ডিপ্রেশন?না অশান্তি৷যাই হবে হোক,তুই এসব নিস না৷তাতে প্রাণখুলে হাসতে পারবি না৷হাসার যে কি আনন্দ!প্রতিটি প্রাণবন্ত হাসি ই একেকটি মনখারাবির প্রতিষেধক৷হাহাকারের প্রতিকার৷সব ছেড়ে যাক,হাসিছাড়া করিস না৷কেনোনা,তোর জলভেজা চোখে সমুদ্র দেখি,ঝড়ের পূর্বাভাস দেখি৷ভাঙা গলুইয়ে তাতে ভাসতে ভাসতে দ্যাখি আমার মৃত্যু৷

খোপ দেখেছি৷পায়রাদের বকম বকম ছটফটানি দ্যাখেছি৷চক্কড় দিতে দিতে মিশে যেতে দ্যাখেছি গতিনির্দেশ হারানো কোনো উড়োযান৷তোর ভেতরও অমন পায়রা ছিলো,উড়োযান ছিলো৷সারা রাত৷এখ বুঝি ঘুমিয়ে গেছিস৷ঠিক ঘুম না,অবসর৷মস্তিষ্ক ও অবসর চাই,নিতে পারেনা এতোটা চাপ৷আর এভাবে নিতে না পারা শুরু হয়ে গেলে অকারণে নিদ্রাভঙ্গ শুরু হয়,অসাড় হয়ে উঠে প্রতিটি সময়৷ঠিক এভাবে ঘূমিয়ে গেলে একদিন,এতোটা রাতে আমি আর জেগে জেগে তোকে খুঁজবোনা৷মাটির বুনটে গড়ে সখ্যতা,মিশে যাবে শরীর,ঠিক কোনো প্রাণ,অথবা আত্মা আমার উপস্থিতির প্রকাশ করবে,দেখিস অথবা খুঁজে নিস আমায়৷কবরদেশেও জন্মে সবুজ ঘাস৷সজীব থাকে ঘাসের শরীর৷ঘাসে ই একদিন মিশে যাবে আমার সমস্ত অনুপস্থিতির ঊপস্থিতি,প্রাণের সঞ্চার৷

আমার আর এসব যাপন ভালো লাগে না৷চারদিকময় বিশাল বিশাল শূন্যের বিস্তার৷মাকে ভাবি,বাবাকে৷সাথেই থাকি,কথা হয়না৷একা লাগে৷জড়িয়ে নিতে ইচ্ছে করে বুক,কখনো বুক আমার আহলাদি হয়৷শুধু বুকে চেপে রাখতে চাই৷আর এই চেপে রাখা বুকে বুক,জানিস তো !কমায় ধূকপুক৷অসুখ৷বাড়ায় হৎপিন্ডের কার্যকারিতা৷তোর কখনো এমন লাগলে বাচ্চাদের বুকে জড়িয়ে নিস৷একদম টান টান বুকে৷কতোবার বুকে আমার জেগেছিলো চর,তৃষ্ণার মরু৷শুধু জড়াবো বলে তোকে,প্রেমেও প্রত্যয়ে৷অথচ অগাধ,অবর্ণনীয় শূন্যতায় আমি রোজ মরে যাই৷বেঁচে থাকিস ঠিকঠাক৷ভালো রাখিস তোর আকাশ,নগর,ফুটপাথ,স্কুলপথ৷ভালো রাখিস জানলা,ঘর৷ধবধবে রাখিস সদা হাসি৷অনেক ভালো থাকিস ,প্রেমিকা আমার !হে,দূরবাসি মুখ৷



🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄🎄




চবির উপাচার্য  প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারকে ইসলামিক স্টাডিজের শিক্ষকবৃন্দের শুভেচ্ছা




চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম নারী উপাচার্য নিযুক্ত হওয়ায় বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারকে ইসলামিক স্টাডিজ , চবির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামি স্টাডিজ  বিভাগের সভাপতি ড. এনামুল হক, ড. আ ফ ম আমীনুল হক, ড. ইলিয়াস সিদ্দিকী, ড. মমতাজ কাদেরী, ড. আব্দুল মাবুদ, ড. এনামুল হক মুজাদ্দেদী ও মুরশেদুল হক প্রমুখ। এ সময় উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে সোনার মানুষ গড়ে তুলতে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ অগ্রণী ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। একই সাথে বিভাগীয় শিক্ষকদেরকেও শুভেচ্ছা ও দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।


বার্তা প্রেরক
মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
সদস্য, ইসলামিক স্টাডিজ এ্যালামনাই এসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যা

No comments: