Tuesday, September 10, 2019

The Way of the World - William Congreve - Summary in Bangla - দ্যা ওয়ে অভ দ্যা ওয়ার্ল্ড

The Way of the World - William Congreve - Summary in Bangla - দ্যা ওয়ে অভ দ্যা ওয়ার্ল্ড

The Way of the World - William Congreve - Summary in Bangla 

The Way of the World - William Congreve - 
Summary in Bangla 
দ্যা ওয়ে অভ দ্যা ওয়ার্ল্ড
উইলিয়াম কনগ্রিভ তার দ্যা ওয়ে অভ দ্যা ওয়ার্ল্ড নাটকটি সর্ব প্রথম ১৭০০ সালে মঞ্চায়িত করেন। "রেস্টোরেশনপিরিয়ড এর অসভ্য ও ইতর প্রকৃতির মানুষদেরকে উপস্থাপন করে এমন কমেডি নাটক গুলোর তালিকায় এটি প্রথমেই থাকবে। এই নাটকের নায়ক ও নায়িকা হল যথাক্রমে মিরাবেল ও মিলাম্যান্ট। নাটকটি শুরু হয় তাদের বিয়ের পরিকল্পনা করার মাধ্যমে। মিলম্যান্টের আন্টি লেডি উইশফোর্টকে এ ব্যাপারে রাজি করানোই হল প্রধান সমস্যা যাই হোক নাটকটি শুরুর আগের কিছু ঘটনা রয়েছে। আমাদের নাটকের নায়ক মিরাবেল ছিল একজন সাধারন যুবক। অর্থনৈতিকভাবে সে খুব একটা সচ্ছল ছিল না। লেডি উইশফোর্টের বিধবা কন্যা অ্যারাবেল ওরফে মিসেস ফেইনালের সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এর ফলে অ্যারাবেল গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এই কেলেঙ্কারির হাত থেকে বাচাতে মিরাবেল তার সাথে জনাব ফেইনালের বিয়ের ব্যবস্থা করে। ব্যাক্তি ও পুরুষ হিসেবে সে অ্যারাবেলের যোগ্য ছিল। তবে সে অ্যারাবেলকে ভালোবাসত না। সে মূলত পসন্দ করত মিসেস মারউডকে। মূলত তার সাথে অবৈধ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্যেই লেডি উইশফোর্ট এর সম্পদের দরকার ছিল। তার সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার লোভেই সে অ্যারাবেলকে বিয়ে করে। লেডি উইশফোর্ট এর সাথে তার ভাইয়ের মেয়ে মিস মিলাম্যান্ট থাকত।  তার পিতার সম্পদ ৬০০০ পাউন্ড ও অন্যান্য জিনিস লেডি উইশফোর্টের কাছে গচ্ছিত ছিল।  তার বাবা উইল করে গেছেন যে, যদি মিস মিলাম্যান্ট নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করে তবে সে তার সম্পদের অর্ধেক পাবে আর যদি লেডি উইশফোর্টের ইচ্ছাতে বিয়ে করে তবে সে সম্পূর্ণ সম্পদ পাবে।
নাটকটি সর্বমোট ৫ টি অঙ্কে বিভক্ত। প্রথম অঙ্ক টিতে আমরা দেখতে পাই মিরাবেল ও তার বন্ধু জনাব ফেইনাল কার্ড নিয়ে খেলা শেষ করছে। এসময় মিরাবেল জানায় আগের দিন রাতে মিরাবেল মিস মিলাম্যান্টের বাসায় গিয়েছিল। সেখানে মিলাম্যান্ট ছাড়াও আরো অনেকেই ছিল যেমন জনাব অ্যানথনি উইটৌডপেটুল্যান্টলেডি উইশফোর্টতার চাচী ও অন্যান্য আরো অনেক মহিলা তারা তার সাথে খুব একটা ভাল আচড়ন করেনি ভালো আচরণ না করার কারণও আছে। তখন ফেইনালের কথার মাধ্যমে আমরা জানতে পারিকোন এক সময় মিরাবেল মিলাম্যান্টকে পাওয়ার জন্যে ৫৫ বছর বয়সি লেডি উইশফোর্ট এর প্রণয় প্রার্থনা করেছিল পরে তিনি জানতে পারেন আসলে সে তার ভাতিজি মিলাম্যান্টকে ও তার সম্পদ পাওয়ার জন্যেই তার সাথে এই অভিনয় করে। এসময় একজন লোক আসে ও তাদেরকে খবর দেয় যেমিরাবেল এর কাজের লোক ওয়েইটওয়েল ও লেডি উইশফোর্ট এর মেইড ফইবল এর এইমাত্র বিয়ে হয়েছে। এতে মিরাবেল খুশি হয় কারণ তার মাথায় মিলাম্যান্টকে বিয়ে করা ও লেডি উইশফোর্টের কাছে গচ্ছিত সম্পদ পাওয়ার একটা বুদ্ধি খেলে যায়। যদিও সে এটা প্রকাশ করে না।
মিরাবেল তখন ফেইনালকে জানায় সে মিলাম্যান্টকে ভালোবাসে। ফেইনাল তখন মিলাম্যান্টকে তারাতাড়ি বিয়ে করে ফেলার জন্যে তাকে বলে। মিরাবেল জানে যে, যদি লেডি উইশফোর্ট এখন বিয়ে করে তবে সে মিলাম্যান্টের সম্পদের একটা বড় অংশ হারাবে তাই তার সম্পদ লাভের একমাত্র উপায় হচ্ছেলেডি উইশফোর্টকে রাজি করিয়ে মিলাম্যান্টকে বিয়ে করা
ফেইনাল চলে গেলে মঞ্চে উপস্থিত হয় উইটৌড এবং পেটুল্যান্ট । তাদের থেকে জানা যায় উইটৌডের ভাই শহরে আসছেন মিলাম্যান্টকে বিয়ে করতে। মিরাবেল তাদের আরো খবর দেয় তার এক চাচা আসছেন লেডি উইশফোর্টকে বিয়ে করার জন্যে।
২য় অঙ্কের শুরুতে দেখতে জনাব ফেইনালের গোপন প্রেমিকা মিসেস মারউড ও মিসেস ফেইনাল জেমস পার্কে বসে গল্প করছিল। তাদের গল্পের মূল বিষয় ছিল পুরুষ এবং স্বার্থোদ্ধারের ক্ষেত্রে তাদের কিভাবে কাজে লাগানো যায়। এসময় সেখানে জনাব ফেইনাল আসে ও মিসেস মারউড এর প্রতি মিরাবেলকে ভালোবাসার অভিযোগ আনে মিরাবেল ও মিসেস ফেইনাল পার্কে আলাদা হয়ে যায়। নাটকের এপর্যায়েই আমরা জানতে পারি যে মিসেস মারউড আর মি. ফেইনালের অবৈধ সম্পর্ক। তাদের দুইজনের কথোপকথন থেকে বুঝা যায় তাদের এই গোপন সম্পর্কে বিশ্বাস বলে কিছু নেই। একে অপরের প্রতি অভিযোগ আর পালটা অভিযোগের মাধ্যমে তাদের কথা শেষ হয়।
অন্যদিকে মি. ফেইনালের স্ত্রী মিসেস ফেইনাল মিরাবেলকে বলে সে তার স্বামীকে ঘৃণা করে মিরাবেল তার সাথে লেডি উইশফোর্ট এর সম্পদ কিভাবে কুক্ষিগত করা যায় এই ব্যাপারে আলাপ করে। এজন্য মিরাবেল ও মিলাম্যান্ট এর বিয়েতে লেডি উইশফোর্ট এর সম্মতি দরকার সে এটাও জানায় লেডি উইশফোর্টকে খুশি করার জন্যেই সে তার চাকর ওয়েইটওয়েলকে ফইবলের সাথে বিয়ের ব্যবস্থা করেছে।
এই পর্যায়ে নাটকে প্রথমবারের মত মিস মিলাম্যান্টের আবির্ভাব ঘটে। সে উইটৌড ও মিঞ্চিং এর সাথে মঞ্চে উপস্থিত হয়। ফইবল তাকে জানায় মিলাম্যান্ট তাকে পাওয়ার জন্যে গোপন পরিকল্পনা করেছে। তাদের প্রস্থান ঘটলে আমরা ফইবল ও ওয়েটওয়েলকে মঞ্চে আসতে দেখি। তাদের আলাপ আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারি লেডি উইশফোর্ট মিরাবেলের উপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্যে তার চাচা জনাব স্যার রোল্যান্ডকে বিয়ে করতে চান। মিরাবেলের পরিকল্পনা অনুযায়ী ওয়েটওয়েলকে স্যার রোল্যান্ড রুপে সাজান হয়
৩য় অঙ্কে আমরা দেখতে পাই লেডি উইশফোর্ট তার বাসায় বিভিন্ন সৌন্দর্যবর্ধক প্রসাধনী ব্যবহার করে তার বয়সের ছাপ লুকানোর চেষ্ঠায় রত। বারবার তার মেইড পেগকে বিভিন্ন আদেশ দিচ্ছিলেন। এসময় মিসেস মারউড তার কাছে আসে আর তাকে বলে সে ফইবলকে সে মিরাবেলের সাথে পার্কে হাটতে দেখেছে। এসময় ফইবল ঘরে ফিরে আসে। লেডি উইশফোর্ট তখন মিসেস মারউডকে ক্লজেটে লুকিয়ে রাখে। লেডি উইশফোর্ট ফইবলকে অবিশ্বস্থতার জন্যে ধমকায়। ফইবল তখন মিরাবেলের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের একটা সুযোগ পায়। তাকে সে বলে পার্কে আসলে মিরাবেল থামিয়েছে আপনাকে অপমান করার জন্যে। এখন আপনি যদি এর প্রতিশোধ নিতে চান তবে স্যার রোল্যান্ডকে বিয়ে করেন, এতে করে মিরাবেল তার চাচার সম্পদের উত্তরাধিকার হারাবে।
লেডি উইশফোর্ট চলে গেলে সেখানে মিসেস ফেইনাল ( অ্যারাবেল ) এসে উপস্থিত হয়। তখন ফইবল তার সাথে মিরাবেলের পরিকল্পনার ব্যপারে কথা বলে। এদিকে ক্লজেটের ভিতরে বসে মিসেস মারউড তাদের কথা শুনে ফেলে। তাদের কথা থেকে সে জানতে পারে যে মিসেস ফেইনাল এক সময় মিরাবেলের প্রেমিকা ছিল। মিসেস মারউড মিরাবেলকে ভালোবাসে কিন্তু মিরাবেলের কাছে তাকে কুৎসিত লাগে। মিসেস মারউডের রাগ শতগুন বেড়ে যায় যখন পরের দৃশ্যে মিলাম্যান্ট তাকে এই ব্যাপারে দোষারোপ করে। তার বয়স নিয়েও মিলাম্যান্ট তাকে কটাক্ষ করে।
রাতের ভোজের আমন্ত্রণে স্যার উইলফুল উইটৌড ও তার ভাই ছোট উইটৌড এবং পেটুল্যান্ট আসে। নাটকের এই অংশে সবচাইতে প্রহসন দেখতে পাই, সেটা হল উইটৌডরা দুই ভাই কেই কাউকে চিনতে পারে না, কারণ স্যার উইলফুল স্বভাবের দিক থেকে একবারে গেয়ো-ভাঁড় আর তার ছোট ভাই হল শহুরে ও অতি আধুনিক। বড় ভাইয়ের এই অবস্থা দেখে ছোট ভাই সরাসরি বলে দেয় সে তাকে চেনে না। সকলের প্রস্থানের পর মিসেস মারউড আর মি. ফেইনাল সেখানে থেকে যায়। মিসেস মারউড তাকে মিরাবেলের গোপন ষড়যন্ত্র সম্পর্কে বলে। সে আসলে একটা ব্যাভিচারী। যেখানে যাকে পায় সেভাবেই তাকে ব্যবহার করেছে। ফেইনাল তখন মিরাবেলের উপর প্রতিশোধ নিতে চায়।
তখন মিসেস মারউড তার সাথে মিলে একটা নতুন একটা পরিকল্পনা করে। সে ফেইনালকে জানায়, যেহেতু লেডি উইশফোর্ট তার ভাইজির সম্পদের নিয়ন্ত্রক এবং তিনি তার কন্যা অ্যারাবেলকে খুব ভালোবাসেন, তাই ফেইনাল যেনো অ্যারাবেলের উপর চরিত্রহীনতার অভিযোগ এনে লেডি উইশফোর্টের উপর চাপ প্রয়োগ করে, যাতে লেডি উইশফোর্ট মিলাম্যান্টের সব সম্পদ ফেইনালের হাতে দিয়ে দেয়।         
৪র্থ অঙ্কে আমরা দেখতে পাই স্যার রোল্যান্ডের সাথে দেখা করার জন্যে লেডি উইশফোর্ট নিজেকে প্রস্তুত করছেন। অন্যদিকে মিলাম্যান্ট আর মদ্যপ অবস্থায় স্যার উইলফুলকেও স্টেজে দেখা যায়। তবে মদ্যপ হলেও সে তার লাজুকতা হারায়নি। ভয় আর লজ্জ্বার সাথে সে মিলাম্যান্টকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। যখন মিলাম্যান্ট তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তাতে সে উলটো খুশি হয় এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে
নাটকের এর পরের দৃশ্যটিকে বলা যায়  Proviso Scene বা চুক্তির দৃশ্য  । এখানে আমরা দেখতে পাই মিরাবেল আর মিলাম্যান্ট এর মাঝে একটি চুক্তি হয়। মিরাবেল জানতে চায় মিলাম্যান্টকে বিয়ে করতে হলে তার কোন শর্ত আছে কিনা। অর্থাৎ কোন শর্তে মিলাম্যান্ট তাকে বিয়ে করতে রাজী হবে। এসময় মিসেস ফেইনাল প্রবেশ করে। মিলাম্যান্ট তাকে জানায় সে মিরাবেলকে খুব ভালোবাসে।
একসময় বহুল আলোচিত ও প্রতীক্ষিত স্যার রোল্যান্ড (নকল) এর আগমন ঘটে। সে লেডি উইশফোর্টকে বিয়ের প্রস্তাব। শেষ মুহূর্তে লেডি উইশফোর্টের কাছে মিসেস মারউড এর একটি চিঠি আসে। যেখানে সে তার উপরের সকল ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জানায়। তখন সেখানে উপস্থিত ফইবল ও ওয়েইটওয়েল তাকে বিশ্বাস করাতে সফল হয় যে এটা আসলে মিসেস মারউডের চিঠি নয় বরং সম্পদের উত্তরাধীকার হারিয়ে মিরাবেল ষড়যন্ত্র করে এই চিঠি লিখেছে।
৫ম অঙ্ক  লেডি উইশফোর্টের বাড়ি। লেডি তখন মিরাবেলের ষড়যন্ত্র বুঝে ফেলেছে। ফইবল তখন বাচার জন্যে নিজের পক্ষে অজুহাত দেখায় কিন্তু তাতে কোন কাজ হয় না।
মি. ফেইনাল লেডি উইশফোর্ট এর কাছে মিসেস মিলাম্যান্টের সকল সম্পদ দাবি করে। তার যুক্তি ছিল মিসেস মিলাম্যান্ট যেহেতু লেডি উইশফোর্টের পসন্দ করা ব্যাক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেছে তাই, সে আর এই সম্পদের দাবি করতে পারে না। সে তাকে আরো বলে যদি সে সেই সম্পদ তাকে না দেয় তাহলে সে তার স্ত্রীকে চরিত্রহীনা বলে সমাজে প্রচার করবে। সে লেডি উইশফোর্টকে বিয়ে না করার জন্যেও চাপাচাপি করে। কারণ আবার বিয়ে করলে লেডি উইশফোর্টের সম্পদও সে পাবে না। তখন লেডি উইশফোর্ট তাদের প্রতি দূর্বল হয়ে গেলেন। এর আরেকটি কারণ হল মিসেস মারউড ফেইনালের পাশে থেকে লেডি উইশফোর্টকে তার আর তার মেয়ের সম্মানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভয় দেখাচ্ছিল। এসময় দুই চাকরানি আসে আর ফেইনালের বিরুদ্ধে তার স্ত্রীর প্রতি অবিশ্বস্থতার বিষয়টি প্রকাশ করে, তখন ফেইনাল তা অস্বীকার করে। এরপর মিসেস মিলাম্যান্ট সেখানে উপস্থিত হয় এবং বলে সে তার সমস্ত সম্পদ পাওয়ার জন্যে স্যার উইলফুলকেই সে বিয়েতে রাজী, তখন ফেইনাল যেনো আরো উন্মত্ত্ব হয়ে যায়। সে তখন তার স্ত্রীর প্রাপ্য সম্পদের দাবী তোলে। সেসময় মিরাবেলের আবির্ভাব ঘটে আর সে কিছু প্রমানপত্র দেখায় যা মিসেস ফেইনালকে তার সম্পদ হারানোর হাত থেকে রক্ষা করবে। যখন ফেইনালের সাথে তার বিয়ে হয়েছিল মিরাবেল আর ফেইনাল তার চরিত্র বুঝে গিয়েছিলেন। তখন মিসেস ফেইনাল তার সম্পদ এর নিয়ন্ত্রণ মিরাবেলকে দিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করে।   এর ফলে মি. ফেইনাল কোন টাকাই পেলো না। অত্যন্ত রাগ ও ক্ষোভ নিয়ে মি. ফেইনাল ও মিসেস মারউড স্টেজ থেকে বেরিয়ে গেলেন।
লেডি উইশফোর্ট তখন বুঝতে পারলেন জনাব ফেইনাল আসলে একটা কালপ্রিট ও তার বান্ধবী মিসেস মারউড আসলে প্রকৃত বন্ধু নয়। তখন তিনি মিরাবেলকে ক্ষমা করে দিলেন। মিলাম্যান্টও তার সম্মতি নিয়ে মিরাবেলকে বিয়ে করতে পারে।   




👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👨‍🏫👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓👩‍🎓












ডাক্তার প্রবুদ্ধ আর জংলি

-সিদ্ধার্থ সিংহ


তড়িঘড়ি তালা খুলে ঘরের ভিতরে ঢুকলেন ডাক্তার প্রবুদ্ধ। পরনে আলখাল্লা-গাউন। গাউনের পকেটে  কতগুলো ব্ল্যাঙ্ক ক্যাসেট আর বুকের সঙ্গে চেপে ধরা একটা নতুন হ্যান্ডিক্যাম ক্যামেরা। কিন্তু যার জন্য সক্কালবেলায় এই ঘরে আসা, সেই জংলিই নেই। তার শুকনো ঘাস-পাতার বিছানাটা ওলটপালট । তিনি না ডাকলে তো ও কখনও দরজা খোলে না। তা হলে এত সকালে ও গেল কোথায়​!
ডাক্তার প্রবুদ্ধ খুব নামকরা ডাক্তার। তবে তিনি যত বড় ডাক্তার, তার চেয়ে বড় গবেষক। গবেষণার জন্য তিনি জীবন বাজি রেখেছেন বহু বার। প্রচণ্ড খামখেয়ালী তিনি। কেউ কেউ আড়ালে তাঁকে পাগলা ডাক্তারও বলেন। ফলে কে আর তাঁর সঙ্গে ঘর করবেন। তাই সারা জীবন বিয়েই করলেন না তিনি। পৈত্রিকসূত্রে পাওয়া এই বিশাল দোতলা বাড়িটায় তিনি একাই থাকেন। সব সময়ের কাজকর্মের জন্য একজন আছে ঠিকই, তবে সে থাকে নীচতলার একটা ঘরে। ঝাড়পোছ বা খাবারদাবার দেওয়ার সময় ছাড়া উপরে খুব একটা দেখা যায় না তাকে। কারণ, তার গৃহকর্তা দিনের বেশির ভাগ সময়ই মেতে থাকেন গবেষণার কাজে। নতুন নতুন কী ওষুধ আবিষ্কার করা যায়, এই মুহূর্তে পৃথিবীর যা আবহাওয়া, আগামী পঞ্চাশ বা একশো বছর পরে সেটা আরও কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে, আর তা থেকে কী কী রোগের উৎপত্তি হতে পারে; সেই রোগ প্রতিরোধ করার জন্য আগাম কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে এবং সেই রোগে কেউ আক্রান্ত হলে, তাকে কী ওষুধ দিলে সে সেরে উঠতে পারে, এ সব নিয়েই মশগুল থাকেন তিনি। আর এর জন্য তিনি কোথাও যান না! যান  অত্যন্ত দুর্গম পাহাড়ে। পাহাড়ি ঘাম চেঁছে তুলে আনার জন্য। যান ঝর্নার উৎপত্তিস্থলে। সেখানে পাহাড় ভেদ করে যে বুদবুদ বেরোয়, তাতে ভেসে বেড়ায় এক ধরনের পাহাড়ি ফুলের গুঁড়ো গুঁড়ো সাদা রেনু। তিনি সেটা ছেঁকে তুলে নিয়ে আসতে যান। যান গভীর জঙ্গলে। খুঁজে খুঁজে নিয়ে আসেন দুর্মূল্য সব শিকড়-লতাগুল্ম। এ সব দিয়ে তৈরি করার চেষ্টা করেন নিত্য নতুন ওষুধ। এবং তাঁর এই গবেষণা ফলাও করে ছাপাও হয় দেশ-বিদেশের নামকরা সব মেডিক্যাল জার্নালে।

খুব ছোটবেলায় তিনি একবার একটা বইতে পড়েছিলেন, আমাদের ভারতীয় চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রবাদপুরুষ ধন্বন্তরির কথা। চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রাচীন গ্রন্থ চরক সংহিতার কথা। তাতে তাঁর মনে হয়েছিল, ওঁরা যখন ওই সময়েই এত দূর পর্যন্ত এগিয়েছিলেন, তা হলে তাঁদের আগের প্রজন্ম, অর্থাৎ ওঁদের যাঁরা পথ দেখিয়েছিলেন, তাঁরাও তো খুব একটা কম কিছু ছিলেন না। তাঁরাও নিশ্চয়ই অনেক কিছু করেছিলেন।
পরে, অনেক পরে, যখন তিনি ডাক্তার হয়ে গেছেন, তখন হঠাৎ একদিন কোথা থেকে যেন তার মাথার মধ্যে আবার উদয় হল সেই ভাবনাটা। তখনকার চিকিৎসা ব্যবস্থা কেমন ছিল! তখনও নিশ্চয়ই অপারেশন করা হত! কিন্তু কী দিয়ে! সেগুলো কি কেউ লিখে রেখে যাননি! এটা আবার হয় নাকি! কেউ না কেউ নিশ্চয়ই লিখে রেখে গেছেন। কিন্তু কে? এবং এখন সেগুলো কোথায়! ওগুলো যদি উদ্ধার করা যায়, তা হলে তো অনেক মারণ রোগ প্রতিরোধ করার জন্য সেগুলো আবার নতুন ভাবে নেড়েচেড়ে দেখা যেতে পারে! দেখা যেতে পারে, সেই চিকিৎসা পদ্ধতিকে আজকের উপযোগী করে ব্যবহার করা যায় কি না! কিন্তু সেই পুঁথিগুলোকোথায়!
তিনি যখন এ রকম ভাবছেন, খোঁজখবর করছেন নানা পুরনো পুঁথির, ঠিক তখনই তিনি টের পান, সে সময় চিকিৎসার সঙ্গে  অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িয়ে ছিল তন্ত্রমন্ত্র, জ্যোতিষ এবং ভবিষ্যদ্বাণী। আর সেই সঙ্গে তিনি খোঁজ পান একটা অদ্ভুত গাছের। এ গাছের শিকড় দিয়ে নাকি একবিংশ শতাব্দী থেকে ত্রয়োবিংশ শতাব্দীর এক হাজার একুশটি মারাত্মক অসুখ নিরাময় করা যাবে। সে গাছ দেখতে কেমন, তার পাতার আকার চৌকো না গোল, সে পাতা হাতে নিয়ে ডললে কী রকম গন্ধ বেরোয় এবং সেই গাছ পৃথিবীর কোথায় কোথায় পাওয়া যায়, তারও একটা তালিকা তৈরি করে ফেললেন ডাক্তার প্রবুদ্ধ।
তবে সে সব পুঁথি থেকে তিনি যে সব দেশ এবং জায়গার নাম পেলেন, সে সব নাম সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহু আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ফলে, এখন আমরা যে নামে যে দেশ, নদী বা পাহাড়কে চিনি, এর আগে তার নাম কী ছিল, তার আগে কী ছিল এবং তারও আগে কী ছিল, এই ভাবে খোঁজ করতে করতে তিনি একদিন পেয়ে গেলেন তিবিন্না  জঙ্গলের সন্ধান। না, আন্দামানের এই জঙ্গলটির সন্ধান তাঁকে কেউ দিতে পারল না। এমনকী ওখানকার স্থানীয় বাসিন্দারাও না। তারা নাকি এ রকম কোনও জঙ্গলের নাম এর আগে কখনও শোনেইনি। তাই তিনি একাই রওনা হয়ে গেলেন সেই জঙ্গলের উদ্দেশে।
কিন্তু জঙ্গল তো দূরের কথা, লোকালয় ছাড়িয়ে তিনি নির্জন জায়গায় পা রাখতেই তাঁকে আটকালেন সেখানকার প্রহরীরা। সরকারি অনুমতি ছাড়া নাকি ওখানে ঢোকা নিষিদ্ধ। কারণ, পৃথিবী যতই আধুনিক হোক না কেন, ওখানকার বাসিন্দারা নাকি এখনও সেই আদিমই রয়ে গেছে। জঙ্গলেই থাকে। পোশাক-আশাক পড়ে না। জন্তুজানোয়ার শিকার করে খায়। ওদের উন্নত করার জন্য সরকার থেকে প্রচুর চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।
কিছু দিন আগে পাঁচ-ছ’জনের একটি দল ওদের অঞ্চলের কাছাকাছি গিয়ে রান্না করা প্রচুর খাবারদাবার, পোশাক-আশাক এবং কয়েকটি রেডিও আর টর্চ রেখে এসেছিলেন। দূর থেকে দূরবীন দিয়ে দেখছিলেন, কেউ আসে কি না। হঠাৎ দেখলেন, এক দল জংলি মানুষ কোথা থেকে ঝপ্‌ করে এসে সেগুলো ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করে দিল। এটা দেখছে, ওটা দেখছে। তার পর ড্রামের মুখ খুলে সেই খাবারগুলো মুখে দিল। মুখ দিয়েই থু থু করে ফেলে দিল সব। জামাকাপড়গুলো হাতে নিয়ে দেখতে দেখতে কেউ দাঁত দিয়ে, কেউ আবার টেনেহিঁচড়ে কুটিকুটি করে ছুড়ে ফেলে দিল। আর রেডিওগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে তার মধ্যে হঠাৎ একটার নব ঘুরে গেল। আর সেটা চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার থেকে মানুষের গলা বেরিয়ে আসতেই ওরা এ ওর মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে লাগল। তার পর পাথর দিয়ে ঠুকে-ঠুকে সেটা ভেঙে দেখার চেষ্টা করতে লাগল ভিতরে কত ছোট মাপের মানুষ আছে। কিন্তু সেটা ভেঙেও ভিতরে কাউকে না পেয়ে ওরা রেডিওগুলো ফেলে দিল। আর টর্চ? বোতাম টিপতেই সেগুলো জ্বলে উঠেছিল দেখে ওরা আঁতকে উঠেছিল। সূর্য ওদের আরাধ্য দেবতা। তাকে এ রকম ছোট্ট একটা জায়গায় বন্দী করল কে? সামনে নিশ্চয়ই ঘোর বিপদ। তাই দেবতাকে তুষ্ট করার জন্য ওরা টর্চ গুলোকে নিয়ে ছুটে গিয়েছিল নদীর কাছে। তার পর সেগুলো ছুড়ে ছুড়ে নদীর জলে ফেলে দিয়েছিল।
ফেরার সময় ওই দলের এক মহিলা আচমকা ওদের সামনে পড়ে গিয়েছিল। ওরা ওই মহিলার গায়ে হাত বুলিয়ে বুলিয়ে দেখার চেষ্টা করেছিল, মহিলাটির গায়ে এত সুন্দর ছাপা-রং এল কোথা থেকে! শরীরে থাকলেও সেগুলো আবার আলাদা! কি এগুল! দেখার জন্য ওই মহিলার শরীর থেকে সালোয়ার কামিজ টেনে টেনে ছিঁড়ছিল। এর পরে হয়তো চামড়াও ছিঁড়তে শুরু করবে। এই ভয়ে দলের বাকি লোকগুলো দূর থেকে সলতেয় আগুন ধরিয়ে ওদের দিকে ছুড়ে দিয়েছিল পটক। পটকার শব্দ ওদের সে কি দৌড়। ভাগ্যিস ওই মহিলা একটার ওপরে একটা চাপিয়ে খান পাঁচেক সালোয়ার কামিজ পরে গিয়েছিলেন!
ওরা নাকি এই সভ্যতাটাকে খুব ভয় পায়। ভয় পায় না ঘৃণা করে কে জানে! ওখানে কেউ গেলে তাঁর জীবন সংশয় হতে পারে। আর তার থেকেও বড় কথা, ওদের নিরুপদ্রব শান্তির  জগতে এই সভ্য মানুষেরা থাবাবসাচ্ছে ভেবে, ওরা খেপে উঠতে পারে। আর ওরা খেপে উঠলে যে তার পরিনাম কত ভয়ঙ্কর হতে পারে, সরকারি মহাফেজখানায় তার ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে। ব্রিটিশ আমলে ইংরেজরা পর্যন্ত ওখানে ঢুকতে সাহস পেত না।
ওদের বিষ মাখানো এক-একটা তিরের ফলা হঠাৎ কোন গাছপালার ফাঁকফোকর থেকে এসে যে বিঁধবে, কে জানে! আর বিঁধলেই অবধারিত মৃত্যু। তাই ওখানে যাবার জন্য সাধারণ মানুষের নো পার্মিশন।
অনুমতি না পেলে কী হবে, তিনি নাছোড়বান্দা। যাবেনই। ওই শিকড়বাকড় তার চাই-ই চাই। অগত্যা প্রহরীদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে, হাত করে রাতের অন্ধকারে তিনি ঢুকে পড়লেন সেই জঙ্গলে। কিছুটা যাওয়ার পরেই দেখলেন, ক’হাত দূরেই উজ্জ্বল একটা আলো। আলো মানে ইলেকট্রিকের আলো নয়, আগুনের আলো নয়, এমনকী দিনের আলোর মতোও আলো নয়। এ এক অদ্ভুত মায়াবী আলো। খানিকটা জ্যোতিষ্কের মতো। নরম নীলাভ।

তিনি ছোটবেলায় শুনেছিলেন, সাপের মাথায় মণি থাকে। অনেক সময় গভীর জঙ্গলে রাতের অন্ধকারে যখন কিচ্ছু দেখা যায় না, তখন নাকি সাপেরা তাদের মাথার মাথা থেকে সেই মণি বাইরে বার করে আনে। তাতেই চার দিক আলোয় আলোকিত হয়ে যায়। কথায় আছে, সাত রাজার ধন এক মানিক। ডাক্তার প্রবুদ্ধর সন্দেহ হল, তবে কি এটা সে রকম কোনও মানিক!
নীচে কোমর সমান ঘন জঙ্গল আর ওপর থেকে নেমে আসা গাছের ডালপালা সরিয়ে-সরিয়ে তিনি যখন ওই আলোর কাছাকাছি পৌঁছলেন, সামনে তাকিয়ে একবারে তাজ্জব বনে গেলেন। সাপ নয়,বাঘ নয়, এক অদ্ভুত দর্শন জীব। ভগবান বিষ্ণুর এক রূপ--- নরসিংহ ।ওটা যদি নরসিংহ হয়, তবে একা নরকুমির। না-মানুষ, না-কুমির। বিশাল চেহারা। হাতির চেয়েও বড়। গা দিয়ে আলো ঠিকরে বেরোচ্ছে। তবে কি এটা ডাইনোসরের কোনও প্রজাতি! এ রকম কোনও প্রাণীর কথা তো তিনি এর আগে কোনও দিন শোনেননি। আর ছবি? নাঃ, এ রকম কোনও প্রাণীর ছবি তিনি সত্যিই কখনও দেখেননি।
কয়েক পলক মাত্র। হঠাৎ তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল সেটা। তিনি চিৎকার করে উঠলেন। ওই আলোতেই মনে হল, সামনের প্রকাণ্ড গাছের মাথা থেকে বটগাছের ঝুরি বা কোনও লতানো ডাল ধরে কেউ একজন ঝড়ের বেগে নেমে আসছে। ততক্ষনে ওই অদ্ভুত দর্শন জীবটা প্রকাণ্ড হাঁ করে ফেলেছে। এক্ষুনি কামড়ালো বলে। ভয়ে এক হাতে মুখ ঢেকে, অন্য হাতটা বাড়িয়ে দিলেন তিনি। যেন হাত দিয়ে ঠেকানো যাবে তাকে। আর হাত বাড়িয়ে দিতেই কামড় বসিয়ে দিল সে। ছিন্ন হয়ে গেল হাত। এ বার তাঁর মাথা গিলে ফেলার জন্য হাঁ করতেই ঝড়ের বেগে নেমে আসা লোকটা গাছের একটা ডাল নিয়ে তার মুখের সামনে নাড়াতেই সে দৌড় দিল। জঙ্গলের মধ্যে দূরে, আরও দূরে যেতে যেতে গাছগাছালির আড়ালে মিলিয়ে গেল আলোটা।
চার দিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। যন্ত্রণায় ছটফট করছেন তিনি। হঠাৎ আগুন জ্বলে উঠল। হাতের দিকে তাকিয়ে উনি দেখলেন, কাঁধ থেকে হাতের একটুখানি মাংস ঝুলছে। তার মানে পুরো হাতটাই খেয়ে ফেলেছে ওই জন্তুটা। কী প্রচণ্ড যন্ত্রণা! কুঁকুড়ে উঠলেন তিনি। কিন্তু আগুনটা ধরাল কে! সামনে তাকাতেই দেখলেন, একটা লোক। লোক নয়, ছেলে। বছর সতেরো-আঠেরোর একটা ছেলে কতগুলো পাতা চিবোচ্ছে। সেই চিবোনো  পাতাগুলো মুখ থেকে বার করে হাতে নিয়ে তাঁর দিকে এগিয়ে আসছে। কালো কুচকুচে গায়ের রং। সাড়া মাথা জুড়ে কোঁকড়ানো চুল। পরনে গাছের পাতা। তাঁর দিকে আসতে আসতে নিচু হয়ে কী যেন তুলল সে। কী ওটা! হাত না! হ্যাঁ, হাতই তো! তাঁরই হাত। তা হলে তাঁর হাতটা ওই জন্তুটা দাঁতে কেটেছিল ঠিকই, কিন্তু খাবার আগেই সামনে জলজ্যান্ত আস্ত একটা মাথা দেখতে পেয়ে সে বুঝি আর লোভ সামলাতে পারেনি। ওই কাটা হাতটা উগরে দিয়েই মাথা খাওয়ার জন্য হাঁ করেছিল সে। ছেলেটা অবশ্য ততক্ষণে কী একটা গাছের ডাল ভেঙে তার মুখের সামনে নাড়তেই সে দে ছুট।
ছেলেটা সেই কাটা হাতটা তুলে নিয়ে এসে তাঁর সামনে দাঁড়াল। আগে তাঁর হাত যেমন ছিল, ঠিক সেই মতো হাতটা কাটা জায়গায় সেট করল সে। তার পর ইশারা করে ডাক্তার প্রবৃদ্ধকে অন্য হাত দিয়ে তাঁর কাটা হাতটাকে ওই ভাবেই ধরে রাখতে বলল। ডাক্তার প্রবুদ্ধ ওর কথা মতো হাতটা ধরতেই, চিবানো পাতাগুলো নিংড়ে সে তার রস ফেলতে লাগল হাতের জোড়া লাগানো অংশটায়।
কী করছে ছেলেটা! এত বড় ডাক্তার তিনি। তিনি জানেন, কারও শরীরের কোনও অংশ কেটে একবারে দু’টুকরো হয়ে গেলে তা জোড়া লাগানো কোনও সাধারণ মানুষের কম্ম নয়। তার থেকেও বড় কথা, চার ঘন্টার মধ্যে হলে হয়তো সম্ভব। কিন্তু তার জন্য দরকার অত্যাধুনিক একটি অপারেশন থিয়েটার এবং অবশ্যই একজন দক্ষ শল্য চিকিৎসক। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার! তিনি দেখলেন, ওই পাতাগুলোর রস পড়তেই তাঁর ব্যথা কয়েক মুহূর্তেই উধাও হয়ে গেল। এবং আরও অদ্ভুত ব্যাপার, কাটা হাতটাও কী করে যেন জুড়ে গেল। শুধু জুড়লই না, এমন ভাবে জুড়ল, খানিক আগেই যে হাতটা দু’টুকরো হয়ে গিয়েছিল, তার কোনও চিহ্নই খুঁজে পাওয়া গেল না। এটা কী কোন চিকিৎসা না কোনও জাদু, না মিরাক্যল!
সেই প্রথম তিনি দেখেছিলেন ছেলেটাকে। একেবারে জংলি সে। তাই তিনি তার নাম দিয়েছিলেন জংলি। এবং বুঝেছিলেন, এত দিন এত দেশে চিকিৎসার এত রকম কোর্স করে তিনি যা শিখেছেন, তা এই জংলির কাছে একেবারে নস্যি। তাই তিনি তখনই ঠিক করলেন, এই জংলির কাছেই তিনি এই জংলি-চিকিৎসার তালিম নেবেন। একজন অন্য জনের ভাষা না বুঝলেও আকার-ইঙ্গিতে নিজেদের মধ্যে তারা ভাব বিনিময় করতে লাগল।
পর দিন সকালে যখন জংলি সমাজের লোকেরা দেখল, জংলি একটা সভ্য মানুষকে ঠাঁই দিয়েছে, তখন ওদের মধ্যে কানাকানি শুরু হয়ে গেল। শুরু হল গুঞ্জন, প্রতিবাদ। ওদের সমাজের প্রধান জানগুরু বসলেন দাওয়ায়। সব অভিযোগ শুনলেন এবং বললেন, সূর্য ডোবার পরে তিনি বিধান দেবেন।
বিধান যে কী দেবেন, জংলি তা জানত। তাই সে কথা ডাক্তার প্রবুদ্ধকে আকার-ইঙ্গিতে বোঝাতেই ডাক্তার প্রবুদ্ধ বললেন, তা হলে কী করা যায় এখন?
জংলি বোঝাল, একমাত্র উপায় পালানো।
---কিন্তু পালাবো কী করে?
--- তারও পথ আছে। আমি তোমাকে ঠিক লোকালয়ে পৌঁছে দিয়ে আসব।
--- আর তুমি?
---আমার জন্য চিন্তা কোরো না।
--- তার মানে? ওরা যখন জানতে পারবে, পালাবার জন্য তুমি আমাকে সাহায্য করেছ, শুধু সাহায্য নয়, আমাকে একেবারে লোকালয়ে পৌঁছে দিয়ে এসেছ, তখন কি ওরা তোমাকে ছাড়বে?
--- না।
--- তবে?
--- তা হলে আমি কী করব?
--- তুমি আমার সঙ্গে চলো ।
--- কোথায়?
--- আমার বাড়িতে। যেখানে আমি থাকি।
--- তোমাদের সমাজ কি আমাকে মেনে নেবে?
--- মানবে। খুব মানবে। তুমি আমার সঙ্গে চলো।
সে দিন দুপুর বেলাতেই জংলির সঙ্গে তিনি গা ঢাকা দিলেন। জংলি সত্যিই জংলি। দরকারি সব জিনিসপত্র ফেলে দিয়ে ডাক্তার প্রবুদ্ধর ব্যাগে ঠেসেঠুসে কী সব ডালপালা শিকড়বাকড় ভরে নিল সে। অত ভারী ব্যাগ পিঠে নিয়ে কেউ কি অত জোরে ছুটতে পারে! তবু সে ছুটছে। আর তাঁর তো ঝাড়া হাত-পা! তবু তিনি তার সঙ্গে পারছেন না! তিনি পারছেন না দেখে জংলি তাঁকে সতীর মৃতদেহের মতো কাঁধে ফেলে শিবের মতো হাওয়ার গতিতে ছুটে চলল। এ ডাল ও ডাল ধরে খানিকটা শিম্পাঞ্জিদের মতো প্রায় উড়ে উড়ে। ডাক্তার প্রবুদ্ধর প্রাণ যায় আর কি!
অবশেষে রাত থাকতে থাকতেই ওরা লোকালয়ে এসে পৌঁছল। ডাক্তার প্রবুদ্ধ তাঁর হোটেলে রেখে যাওয়া বাক্স থেকে জামাকাপড় বার করে পরিয়ে দিলেন জংলিকে। তার পর পোর্টব্লেয়ার হয়ে সোজা দমদম।
যতই পোশাক পরুক আর ডাক্তার প্রবুদ্ধকে দেখে দেখে নকল করার চেষ্টা করুক না কেন, ডাক্তার প্রবুদ্ধ বুঝতে পারছিলেন, লোকালয়ে আসার পর থেকেই লোকজন তাদের দেখছে। বিশেষ করে জংলিকে। আর সেই দেখাটা আরও চোখে পড়ছিল, দমদমে নামার পরে। তাই তিনি ঠিক করলেন, ওকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে প্রথমে কয়েক দিন তালিম দেবেন, সভ্য সমাজের মানুষেরা কী ভাবে চলাফেরা করে; কী ভাবে খাওয়াদাওয়া করে, কেমন করে কথা বলে, সে সব।
সেই মতো তাকে কথা শেখাতে গিয়েই যত বিপত্তি। ও যখন মুখ খুলল, সে আওয়াজ এত জোরে হল যে, ফুল স্পিডে মাইক চালালেও সে আওয়াজ ওর কাছে হার মানতে বাধ্য। আশেপাশের বাড়ির দোতলা-তিন তলার জানালা খুলে গেল। লোকজন উঁকি মারতে লাগল। ঝুলবারান্দায় এসে ভিড় করল লোকজন। দু’-একজন কলিং বেল টিপল।আর ডাক্তার প্রবুদ্ধর কানে এমন তালা লাগল যে, তাঁর মনে হল, বাকি জীবনটা বুঝি তাঁকে কালা হয়েই কাটাতে হবে ।
দু'হাতে কান চেপে তিনি বসে পড়তেই জংলির কী মনে হল কে জানে, সে তার জঙ্গল থেকে বয়ে আনা গাছ-গাছালির কয়েকটা পাতা হাতের তালুতে পিষে তার রস ডাক্তার প্রবুদ্ধর দু’কানের লতিতে মাখিয়ে দিল। আর অমনি ডাক্তার প্রবুদ্ধর চোখ চকচক করে উঠল। কানের তালা লাগা তো ছাড়লই, উপরন্তু তার শ্রবণশক্তি এত বেড়ে গেল যে, দশ মাইল দূরে দাঁড়িয়ে কেউ ফিসফিস করে কথা বললেও তিনি তা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলেন।
কী পাতা এটা? কোন গাছের? এ সব যদি জংলিটার কাছ থেকে জেনে নেওয়া যায, তা হলে তো চিকিৎসাশাস্ত্রে একটা মিরাক্যল ঘটিয়ে ফেলা যাবে। কিন্তু আর কী কী জানে ছেলেটা! কী কী! কোন কোন গাছপালা আছে তার সঙ্গে! এ কথা তাকে বোঝাতেই ডাক্তার প্রবুদ্ধকে সে নিয়ে গেল তার ঘরে। যে ঘরটায় ডাক্তার প্রবুদ্ধ তার থাকার ব্যবস্থা করেছেন।
সে ঘরে ঢুকে তিনি দেখলেন, খাটে যেমন বিছানা-বালিশ পাতা ছিল, তেমনই আছে। মেঝের এক দিকে কিছু ঘাসপাতা ছড়ানো। ওগুলো কী? ওর কাছে জানতে চাইতেই ও যা বলল, তা শুনে অবাক হয়ে গেলেন ডাক্তার প্রবুদ্ধ। ও নাকি ওখানেই শোয়। এই গাছপাতার ওপরে শুলে নাকি প্রচণ্ড গরমেও মনে হবে শীতকাল।আর যত ঠান্ডই পড়ুক না কেন, মনে হবে হেমন্ত কাল। না-ঠান্ডা, না-গরম। আর বালিশ?
জংলি চোখে-মুখে বিস্ময়। বালিশ কেন? শোওয়ার সময় শরীর থেকে মাথা যদি একটু উপরেই রাখার দরকার হত, তা হলে যিনি আমাদের বানিয়েছেন, তিনি সে ভাবেই আমাদের তৈরি করতেন। মানুষ যখন পৃথিবীতে প্রথম এল, তখন কি সে মাথায় বালিশ দিয়ে শুত? তোমরা মাথার নীচে ও সব দিয়ে শোও দেখেই তো তোমাদের শরীরে এত ব্যামো। একটা বয়সের পরেই ঘাড়ে ব্যথা, হাঁটুতে ব্যথা। একটু হাঁটতে গেলে হাঁপিয়ে পড়ো ।
জংলি যখন এ সব বোঝাচ্ছে, ডাক্তার প্রবুদ্ধ তখন গলায় ঝোলানো চশমাটা চোখে লাগিয়ে লতাপাতাগুলোকে ভাল করে দেখছেন। আর তখনই জংলিটা এক লাফে এসে ডাক্তার প্রবুদ্ধর চোখ থেকে চশমাটা ধরে মারল এক টান। দড়ি ছিঁড়ে চশমাটা চলে গেল ওর হাতে। আর সঙ্গে সঙ্গে ও সেটা ছুড়ে ফেলে দিল জানালা দিয়ে।
কী হল? ও হঠাৎ এমন খেপে গেল কেন? ওর ভাষা এখনও তিনি সব বোঝেন না। বুঝতে পারেন না মতিগতিও। তবে বোঝার চেষ্টা করতে লাগলেন, ওর এই চশমা টেনে ছুড়ে ফেলার কারণ। হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন জংলির দিকে। জংলি তখন ঝটপট করে ওই লতাপাতার ভিতর থেকে ক’টা পাতা ছিঁড়ে ডলতে লাগল হাতের তালুতে।
ডাক্তার প্রবুদ্ধকে ও বোঝাল, বড় বড় করে তাকাতে। তিনি বাধ্য ছেলের মতো তাকালেন। কারণ, এ ক'দিনে তিনি বুঝে গেছেন, এই ছেলেটি যা করতে পারে, তা তাঁর জানা চিকিৎসাশাস্ত্রের বাইরে। এ বার কী করবে, সেটা দেখার জন্যই তিনি বড় বড় করে তাকালেন। জংলি তখন সেই ডলা পাতাগুলো নিংড়ে তার থেকে এক ফোঁটা এক ফোঁটা করে দু’ফোঁটা রস ফেলল তাঁর চোখে। চোখ পিটপিট করে তাকালেন ডাক্তার প্রবুদ্ধ। সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল জংলি। জংলিকে দেখতে দেখতে তাঁর চোখের সামনে ভেসে উঠল জংলির শিরা-উপশিরা। রক্ত-মাংস হাড়গোড়। তার পরে হাড়গোড় ভেদ করে ওর পিছনে থাকা আলমারি, আলমারি ভেদ করে দেয়াল। দেয়াল ভেদ করে বাইরে। এ কী দেখছে সে! সব কিছুই যে ট্রান্সপারেন্ট হয়ে যাচ্ছে! এও সম্ভব? এই রসকে যদি ল্যাবরেটরিতে ফেলে একটু ঠিকঠাক করে নেওয়া যায়, আর তা যদি অপারেশনের আগে শল্যচিকিৎসকদের চোখে দিয়ে দেওয়া যায়, তা হলে তো তাঁদের আর কোনও এক্সরে মেশিনেরই দরকার হবে না। আর তাঁদের অপারেশন? সেটা করা তো তাঁদের কাছে আরও সহজ, আরও নির্ভুল হয়ে যাবে।
আর কী কী জানে ছেলেটা! সব, সব জানা চাই তাঁর। তিনি যদি এর কাছ থেকে এই সব জেনে নিতে পারেন, তা হলে আর তাঁকে আটকাবে কে! চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার তাঁর বাঁধা। তবে হ্যাঁ, কেউ যেন টের না পায়! এর কাছ থেকে সব জেনে নিয়ে একেই সরিয়ে দিতে হবে এই পৃথিবী থেকে। যাতে কেউ আর একে কোনও দিন কাজে লাগাতে না পারে।
এই সব ভেবে, জংলি ঘরে ঢুকতেই তিনি তার ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছিলেন গত কাল রাতেই। ভেবেছিলেন, সকালে উঠেই হ্যান্ডিক্যাম ক্যামেরা চালু করে একটার পর একটা ক্যাসেট বন্দি করে নেবেন তাঁর জানা গাছ-গাছালির যাবতীয় গুণাগুণ। কোন গাছের কোন পাতা কী করে কী করলে কোন রোগ সেরে যাবে। কোন শিকড়ে ঘটানো যাবে কোন মিরাক্যল। তার পরে এর ওপর একটার পর একটা থিসিস লিখে চিকিৎসাশাস্ত্রে ধুন্ধুমার কাণ্ডঘটিয়ে ফেলবেন।
সারা রাত ঘুমোতে পারেননি তিনি। তাই ভোর হতে না-হতেই সব চেয়ে আধুনিক হ্যান্ডিক্যাম ক্যামেরা আর বেশ কিছু ক্যাসেট নিয়ে এসে উনি তালা খুলেছেন। যে তালা আগের দিন রাতেই তিনি লাগিয়ে গিয়েছিলেন জংলির ঘরে। কিন্তু ও গেল কোথায়! গত কাল রাতে ও এখানে ঢোকার পরেই বাইরে থেকে উনি যেমন তালা লাগিয়ে গিয়েছিলেন, তালা তো তেমনই লাগানো ছিল!
তবে কি ও রকমই কোনও পাতার রস চোখে দিয়ে ও হয়ে উঠেছিল দূরদৃষ্টি সম্পন্ন! ভবিষ্যতে কী ঘটতে পারে, তা আন্দাজ করতে পেরেছিল আগেই! নাকি, এমন কোনও লতাগুল্মের রস ও খেয়েছিল, যা থেকে ও টের পেয়েছিল, তিনি মনে মনে কী ভাবছেন?
না হলে গত কালই তিনি যখন মনে মনে ভাবছিলেন, ওর থেকে সব জেনে নিয়ে ওকে এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেবেন, তখনই ওর চোখের কোণে কেন চিকচিক করে উঠেছিল জল? আর তার পরেই সে হঠাৎ উধাও হয়ে গেল কেন!
কেন, তার থেকেও বড় কথা, কী করে? তবে কি এই লতাপাতার মধ্যেই রয়েছে সেই পাতা? যে পাতার রস মাখলে নিমেষে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া যায়? বা যে কোনও দেয়াল ভেদ করে বেরিয়ে যাওয়া যায়? অথবা একচিলতে বাতাস হয়ে উবে যাওয়া যায়?
কোন পাতা সেটা? কোন পাতা? তিনি পাগলের মতো করতে লাগলেন। আমাকে বলে দিয়ে যা ভাই, আমাকে একটি বার বলে দিয়ে যা।একটি বার।
আচ্ছা, কোন দিকে যেতে পারে ও! কোন পথে? দরজা দিয়ে? দেয়াল ভেদ করে? নাকি জানালা দিয়ে? হতে পারে! জানালাটা তো খোলা। ডাক্তার প্রবুদ্ধ জানালার কাছে এসে দাঁড়ালেন। তাকিয়ে রইলেন সামনে। দেখতে লাগলেন এক মনে। সামনে বিশাল বাড়ি।বাড়ি ভেদ করে মাঠ। মাঠ ভেদ করে বাড়ি। বাড়ি আর বাড়ি। সে সব ভেদ করে মাঠ, ঘাট, নালা, নদী পেরিয়ে তিনি দেখতে লাগলেন ধান খেত। আখ খেত। ধু ধু মাঠ।পাহাড়। জঙ্গল।
জঙ্গলটা কেমন যেন চেনা চেনা! খানিকটা সেই আন্দামানের মতো। সেই জঙ্গলে হঠাৎ একটা আলো। আলোটা যার গা দিয়ে ঠিকরে বেরোচ্ছে, সে এক অদ্ভুত দর্শন জীব ।এটাকে তিনি যেন আগে কোথায় দেখেছেন! নরসিংহের মতো না-মানুষ, না-কুমির। নিশ্চয়ই এটা কোনও ডাইনোসরের প্রজাতি। আরে, ওটা কী? সামনে দিয়ে ঝড়ের মতো কী যেন একটা উড়ে গেল না! কী ওটা! কী! ডাক্তার প্রবুদ্ধ তাকিয়ে রইলেন সে দিকে। এ বার স্পষ্ট দেখতে পেলেন তাকে। না, সে আর কেউ নয়, তাঁর জংলি। জংলি ফিরে যাচ্ছে তার নিজের জায়গায়। নিজের জগতে। ডাক্তার প্রবুদ্ধ ধপ্‌ করে মেঝের উপরে বসে পড়লেন ।

SIDDHARTHA SINGHA
27/P, ALIPORE ROAD,
KOLKATA 700027

2 comments:

Anonymous said...

Nice story

FaysalAhmed ✔ said...

Nice