Saturday, May 11, 2019

রম্যগল্প দাদার ডায়েরি থেকে আহমাদ কাশফী





রম্যগল্প


            দাদার ডায়েরি থেকে


                        আহমাদ কাশফী




" মনে পড়ে শৈশব আর কৈশোরের স্বৃতিগাঁথা। আর দু' চোখ বেয়ে নেমে আসে অশ্রুর ফল্লুধারা।ষাটোর্ধ প্রায় হয়ে গেছি, তবুও শিশুসুলভ আচরণ পরিত্যাগ করতে পারিনি। কিন্তু,  পুরোপুরি ফিরেও আসেনি। না ফেরার দেশে চলে গেছে। কভু ফিরে আসবেনা। চাইলে ফিরে যেতেও পারবোনা। যদি চেষ্টা করি, ঠিকানা হবে পাবনার বিখ্যাত উম্মাদখানা। পাগলদের সাথে উঠাবসার তুলনায় চার দেওয়ালে আবদ্ধ থাকায় শ্রেয়। যদিও বাচ্চাদের কান্নাকাটি, যেখানে সেখানে মলত্যাগ এসব সহ্য করা আমার জন্য দুষ্কর। আমার অগ্রজরা কিভাবে সহ্য করতো জানিনা। তারা কি মানুষ ছিল, নাকি ফেরেশতা?  তাদের মত পাহাড়সম ধৈর্য আমার নেই।
হরদম অস্বীকার করলেও শৈশবে আমিই  ছিলাম  বিটলামিতে উস্তাদ। দাদার ঘাঢ়ে উঠে বসে থাকতাম। তিনি মৌলভী ছিলেন। নামাজে দাড়াঁলে জায়নামাজ দখল করে বসে থাকতাম। মা খালারা আমার জ্বালাতন থেকে বাচার জন্য কত ফন্দিফিকির করতো! বাবাকে খুব ভয় পেতাম। দুষ্টুমির জন্যও  মাঝেমাঝে আছাড় দিতেন তিনি। স্কুল লাইফে লাস্ট বেঞ্চের ফাস্টক্লাস ছিলাম। এলাকাজুড়ে খ্যাতি ছিল। তবে, মজার ব্যাপার হলো, ফাস্টক্লাসের বিষয়বস্তু হলো, বাউতাবাজি আর ইভটিজিং।ক্লাস থ্রিতে ফাস্ট প্রেম মিম নামের এক পরীর সাথে। চেহারা আসলে পরীর মত সুন্দর।  তাই, আমি পরী বলে ডাকতাম।হঠাৎ, ওর পরিবার বিষয়টা জেনে গেল। ব্যস, মাত্র সাত মাসেই  ব্রেকআপ। আমার জীবনের ছ্যাকার অধ্যায়ও শুরু হয়ে গেলো।
প্রথম প্রেম আর প্রথম ছ্যাকার স্বৃতি এখনো ভুলতে পারিনি। চেষ্টা অবশ্য করেছিলাম। কিন্তু, পাতা ছিঁড়তে গিয়ে ফল পাড়ার মত হয়েছে। বন্ধুবান্ধবরা বলতো, প্রথম প্রেমের স্বৃতি নাকি ভুলা যায়না। হয়তো, ওদের কথায় ঠিক।


তারপর থেকে যে কত মেয়েকে পটিয়ে, লোভ দেখিয়ে প্রেম করেছি! তার সঠিক হিসাব করতে গেলে ক্যালকুলেটরের পর্দায়ও হয়তো জায়গা সংকুলান হবে না
ক্লাস ফাইভের ব্যাচে ১৫ জন মেয়ে ছিল। ওদের ১৩ জনকেই পটিয়ে ছিলাম। বাকি ২ জনকে পটাইতে না পারার কষ্ট এখনো চিনচিন করে। প্রাইমারী পাস করার পর সুবর্ণা নামের একটি হিন্দু মেয়েকে ২০ টাকা দিয়ে রেপ করে আদিম সুখ আস্বাদন করেছিলাম। কি যে মজা পাইছিলাম।
এইটের ফাইনাল এক্সামের পর একটি মেয়েকে নিয়ে দুইমাস নিরুদ্দেশ ছিলাম।
আর, এসএসির পর বাবা বিরক্ত হয়ে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে চাচা,ফুফুরা হাতজোড় করে বাবাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বিরত রাখে।
কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে লাইফে আসে ভোগের নতুন মাত্রা।  নাইটক্লাব, মদেরবার, পতিতালয়, অবশেষে জীবন ক্ষয়।
               পরিশেষ
         --------------
গতবছর দাদা ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুর পর ডায়েরীর দখলদার আমি হয়ে যাই। সেখান থেকে স্বৃতিচারণ করে কিছুটা লিখলাম।

1 comment:

Ahmad Kasfe said...

ধন্যবাদ